ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় আসতেই বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রথমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মোহাম্মদ আলী এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বড় রাজাপুর নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান তিনি। এ সময় সড়কের দুপাশে হাজার নেতাকর্মীরা তাকে অভিবাদন জানায়।
নিজ গ্রামে পৌঁছে প্রথমে বাবা-মার কবর জিয়ারতের পর দুপুর ২টা পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সেতুমন্ত্রী। এরপর ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার আয়োজনে নিজ বাড়ির সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
বিকেলে কবিরহাট জিরো পয়েন্টে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক। বিকেল ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তিনি ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। পরে কবিরহাট জিরো পয়েন্টে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন ওবায়দুল কাদের।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসন গঠিত। এই সংসদীয় আসন ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আর তার নিজের অসুস্থতার কারণে প্রায় তিন বছর নিজ এলাকায় যেতে পারেননি তিনি। সবশেষ ২০১৯ সালের ১৩ আগস্ট ঈদুল আজহা উদ্যাপনে নোয়াখালী গিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
নিজ নির্বাচনী এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের এই আগমনকে ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর আমেজের সৃষ্টি হয়েছে। আগমনী শুভেচ্ছা বার্তা লেখা ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে এলাকা।
ওবায়দুল কাদেরের সফর ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতিসম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষ্যে তার বাড়ির সামনে গার্ড অব অনার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ওবায়দুল কাদেরের এ সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক সচেতন মহল। বিশেষ করে গত দেড় বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে গেছে। দলের বিবদমান দুটি গ্রুপের দ্বিধাবিভক্তির রাজনীতি আরও প্রকট হয়েছে। তার এ সফরে দলের দ্বন্দ্ব নিরসনের আশা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর নানা ঘটনার কারণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনায় পড়তে হয়েছে। আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। সেতুমন্ত্রীর এই ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের ভেতর থেকেই।
নির্বাচনী ব্যবস্থা, দুর্নীতি এবং নোয়াখালী অঞ্চলের আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব-অসংগতি নিয়ে কাদের মির্জার বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তব্য সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি করে। তার অনেক খোলামেলা বক্তব্যই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
জানা যায়, কাদের মির্জার পারিবারিক ভুল-বোঝাবুঝির কারণেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। একপর্যায়ে উপজেলা এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই বিরোধ।
উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে একজন সাংবাদিকসহ দুজনের প্রাণহানিও হয়েছে। দুটি গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ৭২টি মামলা হয়। এসব মামলার আসামি হাজারখানেকের মতো এখনো বাড়িছাড়া।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলছেন, ওবায়দুল কাদেরের এলাকায় আগমন তাদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার করেছে। তারা প্রত্যাশা করছেন, এবার অভ্যন্তরীণ কোন্দলের একটা বিহিত হবে। এলাকার নেতাকর্মীরা প্রতিহিংসা ভুলে সুস্থ রাজনীতি করবেন।
যোগাযোগ :
বাসা নং-১৯, ৫ম তলা, রোড-৭/এ,
ব্লক-বি, বারিধারা, গুলশান, ঢাকা-১২১২
সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমা সুলতানা নীলা
মোবাইল: ০১৬২২৩৯৩৯৩৯
ইমেইল: nazmaneela@gmail.com