নির্বাহী আদেশে আজ বুধবার (৩১ জুলাই) জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। নির্বাহী আদেশেই সিদ্ধান্ত হবে জানিয়ে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, উন্নতি হবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির।
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় আইনগত মতামত দেয়ার পর আজই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে।
সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলনে সহিংসতার পর নিষিদ্ধের পথে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি। ১৪ দলের সিদ্ধান্ত এখন প্রশাসনিকভাবে বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার দিনভর সরগরম সচিবালয়। করণীয় ঠিক করতে মঙ্গলবার বিকেলে বৈঠক করেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৬ মন্ত্রী। বৈঠকের আগে গণমাধ্যমকে আইনমন্ত্রী জানান, বুধবারের মধ্যেই নিষিদ্ধ হচ্ছে জামায়াত-শিবির।
কোন প্রক্রিয়ায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হবে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের মধ্যে এ প্রশ্নের জবাব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, বুধবারের মধ্যেই একটা ব্যবস্থা নেয়ার।
এর মানে কালকের মধ্যেই কি এই সিদ্ধান্ত হবে, এ বিষয়ে আনসুল হক বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ।’
আন্দোলন চলমান রয়েছে, এর মধ্যে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করে পরবর্তী সময় সরকার আবার ঝামেলায় পড়বে কি না, এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘দেখেন এই যে নৃশংসতা, যেটি গত ১৬ জুলাই থেকে চালানো হয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা চালানো হয়েছে, যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন তারা কিন্তু জানিয়েছেন এ সহিংসতার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই...। সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে তথ্য উপাত্ত আছে, জামায়াত-বিএনপি ও ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্রদলের যারা জঙ্গি তারাই এটা করেছে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই দলটাকে যদি নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে আইনশৃঙ্খলা এবং দেশের রাজনীতিরও অনেক উন্নতি হবে। কোনো দলকে যদি নিষিদ্ধ করা হয়, তখন সেটি নির্বাহী আদেশেই হয়। সেটি কোনো বিচার বিভাগীয় আদেশে হয় না। নিয়ম অনুযায়ী জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আইন মন্ত্রণালয় আইনগত মতামত দেয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচার করা এক কথা, আর জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা আরেক কথা। যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নিষিদ্ধে আইন (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন) পরিবর্তন বা সংশোধনের যে কথা আমরা লিখেছি। সংশোধন হলেও সেটা হবে, সেটা হলে যেটা হবে, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে জামায়াতের বিচার করা হবে।’
এর আগে এদিন সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জন্য অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা ও নাগরিক সমাজ। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সোমবার (২৯ জুলাই) ১৪ দলের সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আইনগত দিক সঠিকভাবে দেখে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, যাতে কোনো ফাঁকফোকর দিয়ে এ বাংলাদেশে তারা আর কোনো সুযোগ না পায়।
এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিন্নরূপ দেয়ায় যারা নির্দেশনা দিয়েছে তাদের সব তথ্য সরকারের কাছে আছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। সেইসঙ্গে জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির ঐক্য গড়ার আহ্বানের সমালোচনাও করেন আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা।
যোগাযোগ :
বাসা নং-১৯, ৫ম তলা, রোড-৭/এ,
ব্লক-বি, বারিধারা, গুলশান, ঢাকা-১২১২
সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমা সুলতানা নীলা
মোবাইল: ০১৬২২৩৯৩৯৩৯
ইমেইল: nazmaneela@gmail.com