আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃবিনা টিকিটে ভ্রমন করা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়ার নামে আদায় করা অর্থ তছরুপ করার অভিযোগে দুইজন এ্যাটেনডেন্টকে সাময়িক ভাবে বরখাস্থ করেছে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সোমবার(২ ডিসেম্বর) লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু'র স্বাক্ষরীত চিঠিতে তাদেরকে সাময়িক ভাবে বরখাস্থ ও শোকজ করা হয়েছে।
বরখাস্থাদেশ প্রাপ্তরা হলেন, লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ক্যারেজ ডিপো'র এ্যাটেনডেন্ট সোহেল রানা(টি/নং ৬৪৪) ও আব্দুর রব রাহাত।
রেলওয়ে দপ্তর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত ১৯ নভেম্বর ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ বিনা রশিদে অর্থ আদায় করে তছরুপ করেন উক্ত ট্রেনের এ্যাটেনডেন্ট সোহেল রানা ও আব্দুর রব রাহাত। এ দৃশ্যটি ভিডিও করে যাত্রীদের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে দেন। এ ভিডিও'র বিষয়ে বক্তব্য জানতে রোববার লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু'র কাছে যান ঢাকাপোষ্টের লালমনিরহাট প্রতিনিধি নিয়াজ আহমেদ সিপনসহ ৩জন সাংবাদিক। ভিডিওটি দেখার পরেই সাংবাদিকদের উপর তেঁড়ে উঠে হেনস্থা করেন ওই কর্মকর্তা। এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের রুম থেকে বের করে দেন।
এ ঘটনায় জেলার সাংবাদিকরা ফুঁষে উঠলে নিজের দায় এড়াতে তড়িঘড়ি করে অভিযুক্ত দুই এ্যাটেনডেন্ট সোহেল রানা ও আব্দুর রব রাহাতকে শোকজ করে তাদের সাময়িক বরখাস্থ করে সোমবার আদেশ জারি করেন রেলওয়ের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু। শোকজের জবাব আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়। একই সাথে পৃথক অপর এক আদেশে তাদেরকে সাময়িক ভাবে বরখাস্থও করা হয়।
বরখাস্থাদেশের চিঠিতে বলা হয়, বরখাস্থকালিন সময় তারা খোররাকী বাবদ মুল বেতনের অর্ধেকসহ রেলওয়ের বিধিমত অন্যান্য ভাতা প্রাপ্য হবেন। এ আদেশ রোববার(১ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
লাঞ্চিত সাংবাদিকদের একজন ঢাকাপোষ্ট এর লালমনিরহাট প্রতিনিধি নিয়াজ আহমেদ সিপন বলেন, বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ টাকা নিলেও তাদের রশিদ দেয়া হয় না। এমন একটি ভিডিও আসে আমাদের হাতে। যা নিয়ে লালমনিরহাটের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু'র মতামত জানতে তার কার্যালয়ে যাই আমরা তিনজন সংবাদকর্মী। এ সময় তিনি আমাদের উপর তেঁড়ে উঠে হেনস্থা করে রুম থেকে বের করে দেন। যারা রাজস্ব আত্নসাৎ করল তাদের বরখাস্থ্যই নয়, চাকুরীচ্যুত করতে হবে। একই সাথে যে কর্মকর্তা গণমাধ্যমকর্মীকে হেনস্থা করেছে তারও ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো বৃহত্তর কর্মসুচি গ্রহন করবে জেলার সাংবাদিকরা।
লালমনিরহাটের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ এন্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামান বাবু'র সাথে যোগাযোগ করতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মো. আব্দু সালাম বলেন, ‘যাত্রীসেবা সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে।সাংবাদিকদের হেনস্থা করার বিষয়েও তিনি ব্যবস্থ্য গ্রহণ করবেন বলে জানি