সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। রাতভর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত পাথর নৌকা দিয়ে ফের ধলাই নদীর সাদাপাথর এলাকায় বিছিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও লুট হওয়া পাথর পরিবহনকারী সন্দেহে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ মহাসড়ক থেকে ৭০টি ট্রাক আটকে রেখেছে যৌথবাহিনী।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সিলেট নগরী ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকায় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে। পাথর প্রতিস্থাপনের বিষয়টি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বুধবার রাতে ৬ সদস্যদের একটি দল যৌথবাহিনীর সহায়তায় বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে ফের পর্যটন কেন্দ্র সাদা পাথরসহ ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ফের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। লুট হওয়া পাথর উদ্ধার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে এক জরুরি সমন্বয় সভায় লুট করা পাথর উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও সভায় সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের জরুরি বৈঠক শেষে রাত ১২টার পর থেকে অভিযনে নামে জেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনী। সিলেট নগরী ও সাদা পাথর এলাকায় রাতভর অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, অভিযানে ধলাই নদীর তীরে বিভিন্ন স্থানে সাদাপাথর থেকে লুট করা স্তুপকৃত পাথর জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো সাদাপাথর এলাকায় নিয়ে ফের প্রতিস্থাপন করা হয়। এছাড়াও বুধবার রাত ১২টার পর থেকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের এয়ারপোর্ট এলাকায় সিলেট ক্লাবের সম্মুখে যৌথবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে এই অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বেশ কয়েকটি ট্রাক আটকিয়ে পাথর জব্দ করা হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অফিসার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারে আমরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। লুট করা পাথর উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান আছে।
এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউজে জরুরি সমন্বয় সভা আহ্বান করা হয়। সভায় সাদাপাথর রক্ষায় ৫টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হলো- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করা, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্ট যৌথবাহিনীসহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করা, অবৈধ ক্রাশার মেশিনের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা, পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা।
এর আগে, সাদা পাথর লুটপাটের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে জেলা প্রশাসন। আগামী রবিবারের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে লুটপাটের ঘটনা অনুসন্ধানে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যোগাযোগ :
বাসা নং-১৯, ৫ম তলা, রোড-৭/এ,
ব্লক-বি, বারিধারা, গুলশান, ঢাকা-১২১২
সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমা সুলতানা নীলা
মোবাইল: ০১৬২২৩৯৩৯৩৯
ইমেইল: nazmaneela@gmail.com