

গাছে কান পাতলে নারী কন্ঠে কথা শোনা যায় বিষয়টি কে ভুয়া ও গুজব দাবি করে কেটে ফেলা হয়েছে সেই আলোচিত গাছ। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে শনিবার (২২ জুন) দুপুরে কেটে ফেলা হয় গাছটি। গাছটি কাটার পরও গাছের শেষ কথা শুনতেও ছুটে আসছেন অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, গত সপ্তাহে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের গজিনা এলাকার নিরব নামে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশু গাছটিতে ধারালো দা দিয়ে কোপ দিলে গাছ বলে ওঠে ‘আমাকে মারিস না।’ পরে এ ঘটনা পাশের একজন মহিলাকে বললে তা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
পরে দলে দলে এসে কান পাততে থাকে এলাকার সবাই। তাদের অনেকেরই দাবি, গাছে কান পাতলে মেয়ে কন্ঠে কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেউ সালামের উত্তর শুনছেন, আবার কেউ কান্না বা আর্তনাদের আওয়াজ শুনছেন। তবে গাছ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন বিষয়টি ভুয়া।
এমন ঘটনা আশপাশের কয়েক এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গাছটি দেখতে ও কথা শুনতে ছুটে আসে উৎসুক জনতা। গাছটিকে পবিত্র আখ্যা দিয়ে গাছের চারপাশ ঘিরে বাঁশের বেড়াও দেয় এলাকাবাসী। কেউ কেউ আবার মানত করে গাছের গোঁড়ায় ফেলতে থাকে টাকা। পরে কয়েকজন মুসল্লির অনুরোধ বেড়া ভাঙা ও টাকা তোলা বন্ধ হয়।
ঘটনাটি মূলধারার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার সকালে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান ও স্থানীয় চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান টুটুলের হস্তক্ষেপে গাছটি কেটে ফেলা হয়। এসময় গাছকাটা দেখতেও ভীড় করেন এলাকাবাসী।
ওসি জিল্লুর রহমান ও রাঘদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সহিদুর রহমান টুটুল বলেন, ‘গাছে কথা শোনা যায় বিষয়টি গুজব। আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর আমরা ওই এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে দেখি। বিষয়টি আমাদের কাছে ভুয়া মনে হয়েছে। এছাড়াও আমরা কান পেতে দেখেছি। কোনো কথা শোনা যায় না। পরে আমরা গাছটি কেটে ফেলি।’
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বলছে গাছ থেকে কথা শোনার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন বিষয়টি ভ্রম ছাড়া কিছুই না।