• আজ ৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 ‘ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের অনেককে আনন্দিত করেছে’ | মাঝ পথে থেমে গেলো কক্সবাজারগামি পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন | ইসরাইলে ৪ শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান, পাঠিয়েছে শত শত ড্রোন | ইরান কখনো পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করবে না: খামেনি | আ.লীগকে নেব না, ভালো মানুষদেরও বাদ দেব না: মির্জা ফখরুল | সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে পাকিস্তান, ইসরাইলকে কড়া হুঁশিয়ারি | মির্জা ফখরুলের সাথে বৈঠক করলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ফেরেস | ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইসরাইলের হামলা, ভিডিও প্রকাশ! | ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করল পাকিস্তান | সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে: আইন উপদেষ্টা |

কে এই অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম?

| নিউজ রুম এডিটর ১:৫০ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ১১, ২০২২ সারাদেশ

অধ্যাপক ডা. রাশিদা বেগম একজন স্বনামধন্য প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ এবং ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় বাংলাদেশের অন্যতম পথিকৃৎ এবং ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আইসিআরসি) এর প্রতিষ্ঠাতা।

ডা. রাশিদা বেগম ১৯৫৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার বাসবুনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৭৫ সালে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ডা. রাশিদা বেগম ১৯৮২ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক এবং ১৯৯৪ সালে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগে ফেলোশিপ সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিকেল শিক্ষায় ডিপ্লোমা করেন এবং ১৯৯৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় কাজ শুরুর পূর্বে ডা. রাশিদা বেগম যুক্তরাজ্য এবং সিঙ্গাপুর থেকে বন্ধ্যাত্ব এবং এসিস্ট্যাড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি (এআরটি) বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেন। ২০০৬ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ লিডস থেকে ক্লিনিক্যাল ভ্রূণবিদ্যায় এমএসসি সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন।

ডা. রাশিদা বেগম স্নাতক সম্পন্ন করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ঢাকার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চাকরি করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি বিভাগে চাকরি করার সময় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এ উত্তীর্ণ হন। তিনি ফেলোশিপ ট্রেইনিং শেষ করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে যোগদান করেন। ডা. রাশিদা বেগম ২০০২ সালে ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আইসিআরসি) প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি দক্ষতার সাথে বন্ধ্যাত্ব এর চিকিৎসা নিয়ে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে এসিস্ট্যাড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজি (এআরটি) নিয়ে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। এখানে হাজারের অধিক দম্পতির সফলতার সাথে তিনি চিকিৎসা করেছেন। বর্তমানে ডা. রাশিদা বেগম রাজধানীর মোহাম্মাদপুর এ তার প্রতিষ্ঠিত “ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (আইসিআরসি) “চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন।

ডা. রাশিদা বেগম গবেষক হিসেবেও কাজ করছেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৮২ টির মত জার্নাল প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন বই এ লেখার পাশাপাশি তিনি ২০১৯ সালে প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগে রোগীর ব্যবস্থাপনা সহায়ক একটি বই প্রকাশ করেন।

২০০৫ সালে সেরা গবেষণার জন্য এশিয়া ওসেনিয়া ফেডারেশন অব অবস্টেট্রিক্স এন্ড গাইনোকোলজি (এওএফওজি) থেকে ‘ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন। তিনি এই সম্মাননা লাভ করা বাংলাদেশের প্রথম স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। একই সালে নারীকণ্ঠ ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে ‘শাইনিং পার্সোনালিটি অ্যাওয়ার্ড’ পান। ২০০৮ সালে দেশপ্রেমী সাংস্কৃতিক সংঘ ডা. রাশিদা বেগমকে ‘বেস্ট ফার্টিলিটি স্পেশালিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ এ ভূষিত করে। ২০১০ সালে তিনি ‘হেলেন কেলার’ গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। ইনফার্টিলিটি চিকিৎসায় অবদানের জন্য ২০১৬ সালে অবস্টেট্রিক্স এন্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি (ওজিএসবি) এই গুণী চিকিৎসককে আজীবন সম্মাননা প্রদান করে। তিনি ২০১৭ সালে একইসাথে সুইজারল্যান্ডের ইউরোপিয়ান বিজনেস এন্ড মেডিকেল এসোসিয়েশন প্রদত্ত ‘রোজ অফ প্যারাসেলসাস অ্যাওয়ার্ড’ এবং সাহেরা হাসান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান। চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণার স্বীকৃতি স্বরূপ রয়েল কলেজ অফ অবস্টেট্রিসিয়ান এন্ড গাইনোকোলজিস্ট ২০২১ সালে ডা. রাশিদা বেগমকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।

গুণী এ চিকিৎসকের হাত ধরেই বন্ধ্যাত্ব দুরীকরনে নব যুগের সুচনা হয়।