• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুদিন আগেও নতুন ঘরের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন নিহত নাবিক

| নিউজ রুম এডিটর ৮:২১ পূর্বাহ্ণ | মার্চ ৩, ২০২২ জাতীয়, বাংলাদেশ, লিড নিউজ

বিদেশের মাটিতে হঠাৎ থমকে গেল ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমানের জীবন। ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে বিমান হামলায় বরগুনার হাদিসুর রহমান নিহত হয়েছে। এমন মৃত্যুতে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

হাদিসুর বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে ।

হাদিসুর চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে ২০১৮ সালে পাস করেন। এরপর থেকে ওই জাহাজে ছিল। সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিল মাস ছয় আগে। তবে ইউক্রেনে আটকে পড়ার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে নিয়মিত উদ্বেগ প্রকাশ করতেন বলে গণমাধ্যমকে জানান তারা পরিবারের সদস্যরা। দু’দিন আগে সোমবারও বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান তারা।

নিহত হাদিসুরের ছোটভাই মো. তারেক গণমাধ্যমকে জানান, মৃত্যুর আগেও হাদিসুর কথা বলেছেন। বাড়িতে এসে নতুন ঘরের নির্মাণকাজ করার কথাও জানিয়েছেন। কিন্তু বুধবার (২ মার্চ) স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে অলভিয়া বন্দরে থাকা ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের বাইরে অবস্থান করে ফোনে কথা বলছিলেন হাদিসুর। এসময় বিমান হামলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিহত হয়েছেন।

তারেক আরও বলেন, ‘ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন, মা বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। এক নজর হলেও ভাইয়ের লাশটা শুধু দেখতে চাই। ভাইকে হারিয়ে আমাদের পরিবারটি পথে বসে গেল।’

জানা যায়, জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মুঠোফোনের নেটওয়ার্কের জন্য ব্রিজে অবস্থান করছিলেন। ঠিক সে সময়ই বিমান হামলার শিকার হন তিনি। এখনো ৪৭ বছর বয়সি হাদিসুর রহমানের দেহাবশেষের সন্ধান মেলেনি বলে জানিয়েছেন জাহাজের নাবিকরা।

এর আগে, ইউক্রেনের জলসীমায় আটকে পড়েছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) এর এই জাহাজটি। এতে ২৯ জন নাবিক রয়েছে বলে বিএসসি সূত্রে জানা গেছে।

বিএসসি সূত্রে জানা যায়, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়।

তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেন শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তারা। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ।