বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-২ এর সদস্যরা।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাব-২ এর একজন কর্মকর্তা সময় নিউজকে বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। কিছুদিন ধরেই তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে গ্রেফতার শফিকুল ইসলামকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এছাড়া শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) এ বিষয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল তারিখে (বাংলা ১৪০৮ সনের পহেলা বৈশাখ) রমনার বটমূলে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে গ্রেনেড হামলা সংঘটিত হয়। ওই হামলা ১০ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি বহু মানুষ আহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০০৬ সালের ১৯ নভেম্বর এ মামলায় মুফতি আবদুল হান্নান আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) আদালতে ওই ঘটনায় দুটি অভিযোগপত্র দেয়। এর একটি হত্যা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে।
ওই হামলার প্রায় ১৩ বছর পর ২০১৪ সালের ২৩ জুন। রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
আদালতে রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন। উভয় আবেদনের ওপর ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। আদালত বদল হওয়ায় শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে মামলাটি। অন্যদিকে, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা এখনও নিম্ন আদালতে বিচারাধীন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ মার্চ বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
তবে সাবেক বিট্রিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় বর্ষবরণে গ্রেনেড হামলা ও মৃত্যুর ঘটনার মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।