

এই যে আজকে এত সুন্দর একটা ওয়েদার, বেরিয়ে যাও না বন্ধুদের সাথে কিংবা একা , ” আগামীকাল আইটেম আছে! আচ্ছা বল তো , আমাদের আইটেম থাকে না কবে? আইটেম না থাকলে ওয়ার্ড ফাইনাল থাকবে , নয়ত কার্ড , নয়ত টার্ম! জীবনের কত চড়াই উৎরাই পাড় করে মেডিকেলে আসছ , এখন কি একটু নিজেকে ছাড় দেয়া যায় না? সিস্টেম তোমাকে সেটা দিবে নাহ, নিজের জন্য সেটা তোমাকে তৈরি করে নিতে হবে। সত্যি করে একটা কথা বলি , আমাদের সিস্টেম যদি অনেক সুখকর হত তারপর ও আমরা গুটি কতক মানুষ তখনও থাকব , যারা নিজেদেরকে তখনও সময় দিতে পারব নাহ!
মেডিকেলে মাঝারি কাতারের মানুষ গুলো সবসময় বেচে যায়। তোমাদেরই কিছু ব্যাচমেট আছে দেখবা যারা বিন্দাস ঘুরতিছে , ফিরতিছে , আবার পড়ার সময় ঠিকি পড়ে ক্লিয়ার করে ফেলতিছে , বুকে হাত রেখে বল , মাঝেমাঝে হিংসে হয় নাহ? আমি বলছি নাহ পড়াশোনা করা লাগবে নাহ , অবশ্যই লাগবে কিন্তু কখন কি করতে হবে সেটা তোমাকে জানতে হবে! এটা হচ্ছে GOLDEN RULE!
তোমার এই মাঝারি কাতারের ব্যাচমেট টাই দেখবে দিন শেষে জিতে যাবে।কারন এই বয়সে এসে মা- বাবা তোমাকে মেডিকেলে টপ করার জন্য প্যারা দেয় নাহ , দেও তুমি নিজেই! কিঞ্চিৎ তিক্ত কথা , যারা টপ করে তারা সবাই কি ক্লিনিকাল সেক্টরে গিয়ে খুব ভালো করে , তারাই কি শুধু ভালো ডাক্তার হয়! একটু খোঁজ নিয়ে দেখ তো! খেলা কিন্তু ওইখানেই!
আমার এডমিশনের একটা কাহিনি বলি! আমি যখন পড়তাম আমার টেবিলে ” লাদাখের ” ছবি থাকত , কারন আমার একটাই কথা আমি ডাক্তার হয়ে টাকা কামাব, নিজের টাকায় ঘুরব! আমার জন্য এটাই মোটিভেশন। তোমার হয়ত ফটোগ্রাফি করতে ভালো লাগে, নাহয় লেখালেখি করতে , নাহয় জার্নাল পড়তে , তা হোক পৃথিবীর অন্য যা কিছু। মেডিকেলের এই চাপে নিজের শখগুলোকে মেরে ফেল নাহ! অনুরোধ! নাহলে ৩০-৪০ বছর পড়ে যখন পেছন ফিরে তাকাবে দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছুই আসবে নাহ! অনেকে একটু ট্রিগার খেয়ে যেতে পারে টাকার কথা শুনে! ওয়ার্ডের স্যাররা প্রায়ই একটা কথা বলেন , “রোগীর সেবা হচ্ছে বাই প্রডাক্ট!” এটা হবেই যদি ভালো মানুষ হয়ে থাকি!
আরেকটা তিক্ত কথা বলি, মেডিকেলে ৯০% মানুষ “Fake”, কেন বললাম? সেই তুমি যখন সবকিছুকে বেলেন্স করে চলতে শিখবে , তোমারি কিছু ব্যাচমেট ( আমি কিন্তু বন্ধু বলিনি) তোমাকে এটা ভাবাতে বাধ্য করবে তুমি সারাদিন পড়, পড়া ছাড়া তোমার জীবনে কিছু নেই , অথচ তুমি কিন্তু বিন্দাস সব কিছু করছ! কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারনে তাদের তোমার সম্পর্কে এটা বলে শান্তি লাগবে! এদের কথা এক কান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেও!
MORAL: পরিশ্রমের সময় কঠোর ভাবে কর! পড়ার সময় পড়, ঘুরার সময়ে ঘুর, নিজেকে বাক্সবন্দি করে রেখ নাহ! নিজেকে ছাড় দিতে শিখ, নিজেকে ক্ষমা করতে শিখ। দেখবে জীবন এতটাও খারাপ নাহ!
লেখক : রিযওয়ানা ইসলাম সুমাইয়া
৩য় বর্ষ FMC