• আজ ২রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ মারা গেছেন | ফ্যাসিস্টরা নববর্ষকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছিল: নাহিদ | দেশ থেকে অশুভ দূর হয়েছে, যতটুকু আছে তাও চলে যাবে: প্রেস সচিব | ড: ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার | গাজায় বর্বরতার প্রতিবাদ: কানাডা-ইউরোপেও ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ | যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি থাকা বিদেশিদের নিবন্ধন করার নির্দেশ | নেতানিয়াহুর ছবিতে পেটানোর খবর ইসরাইলের গণমাধ্যমে | সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ | মার্চ ফর গাজা: সোহরাওয়ার্দী যেন এক টুকরো ফিলিস্তিন | সাবেক এমপি হাবিব হাসানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা |

ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে আমাদের বের করে দিয়েছিল: মীর

| নিউজ রুম এডিটর ১:৪৩ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২৬, ২০২২ বিনোদন

সঞ্চালক-কমেডিয়ান হিসেবে দুই বাংলায় দারুণ খ্যাতি রয়েছে মীর আফসার আলীর। পশ্চিমবঙ্গের জি-বাংলার জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘মীরাক্কেল’ উপস্থাপনা করে দর্শকের মনে জায়গা করে নেন তিনি। অভিনয়ের জন্যও সুখ্যাতি রয়েছে তার। কিন্তু অনেক সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে হয়েছে তাকে। সপরিবারে ভাড়া বাড়ি থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকদিন আগে সেই গল্প শুনিয়েছেন মীর আফসার আলী।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মীর আফসার আলী বলেন—‘ঘটনাটি ১৯৮৭ সালের। সেই সময়ে আমরা থাকতাম রিপন স্ট্রিটের পাশে ওয়েলসলি স্ট্রিটে। আমরা যেখানে থাকতাম সেটা বাস্তবিকই সিঁড়িতলার ঘর ছিল। মানে এক কামরার ঘরটি সিঁড়িরতলায় ছিল। আসলে যাদের ভাড়াটে হিসেবে থাকতাম তাদের এটি সার্ভেন্ট কোয়াটার ছিল। ওই ঘরে আব্বা-আম্মার ঘঙ্গে থাকতাম আমি।’

রাতারাতি ঘরহারা হওয়ার কথা জানিয়ে মীর বলেন, ‘সিঁড়িতলার ঘর হওয়ার কারণে মাথা নীচু করে ঢুকতে হতো। এ ঘর থেকে আমাদের উৎখাত করার জন্য অনেক দিন ধরে চেষ্টা চলছিল। যে প্রোমোটার অসৎ উপায়ে বাড়িটি অধিগ্রহণ করে, সে মামলায় জিতে যায়। ১৯৮৭ সালের ৩১ আগস্ট সেখান থেকে সপরিবারে আমরা উৎখাত হই। রাতারাতি আমরা ঘরহারা হয়ে যাই।’

সেদিনের স্মৃতি হাতড়ে মীর বলেন, ‘সেদিন দুপুরবেলা আমি স্কুল থেকে ফিরে দেখি, আব্বা নামাজ পড়ছেন। কিছু গুন্ডা স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সমস্ত জিনিসপত্র রাস্তায় ফেলে দেয়। খাবার, বাসন, আসবাবপত্র রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছিল। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ওই দৃশ্য কোনোদিন ভুলব না; সারাজীবন ওই দৃশ্য আমাকে ব্যথা দেবে।’

মীরের বয়স তখন ১২ বছর। ওই পরিস্থিতিতে তাদের আশ্রয় দেয় মীরের বাবার অফিসের বস। তা জানিয়ে মীর বলেন, ‘আব্বা যার অধীনে চাকরি করতেন, তিনি তার কারখানায় আমাদের আশ্রয় দেন। কারখানায় যে মিস্ত্রিরা ছিলেন তারা খুব সাপোর্টিং ছিলেন। তারা আমার মাকে আগলে রেখেছিলেন। কারণ একজন মহিলা বাচ্চা নিয়ে কারখানায় থাকছেন। সেটা খুব ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা ছিল।’

দুঃসহ স্মৃতি ঘুমাতে দেয়নি মীরকে। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই সময়ে আব্বা চাইছিলেন মাকে নিয়ে আমি গ্রামের বাড়ি চলে যাই। কারণ সেখানে আমাদের একটা বাড়ি আছে। কিন্তু আমার পরীক্ষার কারণে যেতে পারিনি। আব্বা চাননি আমার পরীক্ষায় কোনো ক্ষতি হোক। সুতরাং কারখানায় থেকে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে পাস করি। তারপর যখন পূজার ছুটি হয় তখন গ্রামের বাড়ি চলে যাই। সেই যাওয়া ছিল গভীর ক্ষত নিয়ে। কারণ মাথার ওপর একটা ছাদ ছিল সেটাও চলে গেছে। সেদিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। রাতে দুঃস্বপ্ন দেখতাম, আবারো কেউ আমাদের বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে।’

‘সিঁড়িতলার ঘর থেকে যখন বিতাড়িত হই, তখন মনে মনে একটা পণ করেছিলাম; একদিন বাবা-মাকে এমন একটি ঘর উপহার দেব যেখানে মাথা নীচু করে নয় উঁচু করে ঢুকতে হয়। আপনাদের ভালোবাসায় সেটা অনেকটা করতে পেরেছি।’ বলেন মীর।