পার্বত্য চট্টগ্রামে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) হঠাৎ কেন অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে তা জানতে তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
ঈদের আনন্দের মধ্যে পাহাড়ে অশান্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে যৌথ অভিযান চলছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’
‘আর গোটা পাহাড়ে অশান্তি হওয়ার কারণ নেই। বিষয়টি হচ্ছে, বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি ও কিছুটা আলীকদম এলাকাজুড়ে বম নামের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে আছে। খাগড়াছড়িতে চারটি উপজেলায়, রাঙ্গামাটিতে তিনটি এবং সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বান্দরবানে, ১৩টি। এর মধ্যে বম সম্প্রদায় খুব বড় না। ওখানে মারমাই প্রধান, এছাড়া ত্রিপুরা ও চাকমা সম্প্রদায় রয়েছে। তাদেরই প্রধান্য রয়েছে,’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী বলেন, ‘চীন ও ভারত সীমান্তের কাছে চিন নামে তাদের একটি রাজ্য আছে। মূলত সেখানে তাদের একটি ঘাঁটি আছে বলে মনে করা হয়। কুকি চিনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও হয়েছে। এরপর হঠাৎ করে তারা কেন অস্ত্র হাতে নিল, সেই কারণ বের করতে তদন্ত হচ্ছে।’
‘সংক্ষুব্ধ হয়ে তারা এটা করতে পারে, কিন্তু এটির কারণ জানা নেই। এর সঙ্গে মিজোরামের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা; আমরা জানি না,’ যোগ করেন তিনি।
কাদের বলেন, ‘সীমান্ত থেকে কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বা সন্ত্রাসের মদদ দেয়া হবে বলে আমরা মনে করি না। তবে যাতে পরিস্থিতির আর কোনো অবনতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে যৌথ অভিযান চলছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’
নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা ঘাটতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হঠাৎ করে এমনটা হতে পারে। ওই এলাকা সম্পর্কে যদি আপনার ধারণা থাকে, যদিও আমি পাহাড়ের সর্বত্র অনেক রাস্তা ও সেতু করেছি, তবুও এগুলো বিচ্ছিন্ন এলাকা, যেমন রুয়াংছড়ি, থানচি ও রুমা। এসব এলাকায় আমি গেছি। সেখানে সেতু উদ্বোধন করেছি। এটা এখন তদন্ত হচ্ছে, সবই বেরিয়ে আসবে।’
এর আগে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি এবং এক কর্মকর্তাকে অপহরণ করে কেএনএফ। এতে পাহাড় আবার অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। কুকি- চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কেএনএফের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নাথান বমের নামা জানা গেছে। ২০১২ সালে কুকি-চিন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনস বা কেএনডিও নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন তিনি, পরবর্তীকালে যা কেএনএফে রূপান্তরিত হয়।