• আজ ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মে দিবস হউক শ্রমিকের অধিকারের প্রত্যয়

বছরের অন্যান্য আন্তর্জাতিক দিবসের মতো মে দিবসটিও উৎযাপিত হয়ে থাকে। মিছিল, মিটিং, বক্তৃতা, সেমিনার, প্রবন্ধ ইত্যাদি উৎসবের মাধ্যমে আড়ম্বের সাথেই উৎযাপিত হয় দিবসটি। সরকারি- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অফিস- আদালত ছুটি থাকে এ দিনে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচি প্রকাশিত হয় পত্র- প্রত্রিকায়। মিডিয়াগুলোতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় অনুষ্ঠানগুলো। প্রতিবছর এমন বহু আয়োজনের মাধ্যমেই গত হয় দিবসটি।
একটি জাতির অর্থনৈতিক উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রে শ্রমিকের শ্রম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
একটি জাতির অর্থনৈতিক উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রে শ্রমিকের শ্রম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।

এমন বিভিন্ন আয়োজন ও প্রতিবছরের প্রতিপাদ্য ভিন্ন হলেও মূল উদ্দেশ্য কিন্তু একটাই, শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ। আয়োজিত অনুষ্ঠানের স্লোগান ও প্রতিপাদ্য অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং তা ইতিবাচক। কিন্তু, শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষণে আমরা কতটুকু যত্নবান সেটিই বিবেচ্য।

একটি জাতির অর্থনৈতিক উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রে শ্রমিকের শ্রম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে উৎকর্ষ সাধনের ক্ষেত্রে শ্রমিকের গুরুত্ব অপরিসীম। সুতরাং একটি জাতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

শ্রমিক ও মালিকের মাঝে ন্যায়নীতি, সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু,মে দিবসকে কেন্দ্র করে এতএত আয়োজন হওয়া শর্তেও কেন শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষিত নয় ? মে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা যদি হয় শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষণ তাহলে আমরা এখন অব্দি ব্যর্থ। নিশ্চিত করতে পারিনি শ্রমিকের অধিকার।

আমাদের মনে রাখা উচিত, একটি জাতির উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য শুধু অর্থনৈতিক উৎকর্ষ সাধন যথেষ্ট নয়। মৌলিক শিক্ষাসহ জ্ঞানগত ও উন্নত চরিত্রগত চেতনার প্রয়োজন। জাতির একটি বড় অংশ শ্রমজীবী শ্রেণি বাকি থেকে যায় এসব শিক্ষা থেকে। অথচ এগুলো শেখা তাদের মানবীয় অধিকার। তাদের এই অধিকার সংরক্ষণে আমরা কতটুকু সচেতন? তাদের শ্রমের সঠিক মূল্যায়নে আমরা কতটুকু যত্নবান?

আমাদের ব্যক্তিগত পরিবর্তন প্রয়োজন। ব্যক্তিগত পরিবর্তন যখন বিস্তৃত হবে তখন তা সামাজিক বিপ্লবের রূপ নিবে। সুতরাং আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক উভয়ভাবেই পরিবর্তন প্রয়োজন। বাড়ির কাজের ছেলেমেয়ে, দারোয়ান, ড্রাইভার, কেয়ারটেকার, অফিস আদালতের পিয়ন, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, রিকশাওয়ালা, দিনমজুরি সবার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, যেন তাদের হক নষ্ট না হয়।

এক্ষেত্রে আল্লাহর ভয় ও তার জবাবদিহিতার অনূভুতি প্রয়োজন। কারণ, ইসলাম আমাদের সঠিক পথের দিশা দেয়। শ্রমিকের শ্রমের মূল্যায়নের শিক্ষা দেয়। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বেই তার পাওনা পরিশোধ কর। সুতরাং, মে দিবস শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, মে দিবস হোক শ্রমিকের অধিকার সংরক্ষণের প্রত্যয়।