• আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 সংসদের আসন বাড়িয়ে ৬০০ করার সুপারিশ | মানবিক বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার শিক্ষার্থীরা; সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আমিনুল হক | বাংলাদেশকে তাবেদারী রাষ্ট্র হিসাবে মনে করতো ভারত –রুহুল কবির রিজভী | রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল, ১১টায় বৈঠক | সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে মামলার ভয়ে যুবককের আত্নহত্যা! | যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না: আসিফ নজরুল | মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ মারা গেছেন | ফ্যাসিস্টরা নববর্ষকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছিল: নাহিদ | দেশ থেকে অশুভ দূর হয়েছে, যতটুকু আছে তাও চলে যাবে: প্রেস সচিব | ড: ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার |

জিপিএ-৫ পেল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী তানাজ ।

| Evan Adil ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | মে ১৩, ২০২৪ জাতীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক ।

জিপিএ-৫ পেল সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত তানাজ

শেরপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজ চলতি ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু এরপরেও বিষাদের ছায়া নেমেছে বাড়িতে। কারণ যাকে নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠার কথা ছিল বাড়ির সবার, সেই তানাজই যে আজ বেঁচে নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝড়েছে তার।

 

জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলার চরশিমুলচুড়া গ্রামের বাসিন্দা কুয়েতপ্রবাসী মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব ও মোছা. মনিরা বেগম দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজই বড়। তানাজ শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করত। সেই সুবাদে শেরপুর শহরের নওহাটা এলাকায় বাড়ি করে সেখানেই থাকতেন তারা। চলতি বছর তানাজ এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। তবে ফল প্রকাশের আগেই গত ৩১ মার্চ ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় তানাজ ও তার ছোটভাই আনাছ নিহত হয়।

 

১২ মে রোববার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায়, তানাজ জিপিএ-৫ পেয়েছে। শুধুমাত্র বাংলা বিষয়ে এ গ্রেড ছাড়া বাকি সব বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে সে। এ সংবাদ শোনার পর তার বাড়িতে আনন্দের বদলে যেন আরও বিষাদ নেমে আসে।

 

সরেজমিনে শহরের নওহাটা এলাকায় তানাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তানাজের মা মোছা. মনিরা এখনও পুরোপুরি সেরে উঠেননি। অসুস্থ অবস্থায়ই মেয়ের কথা স্মরণ করে কাঁদছেন তিনি। আর মেয়ের ছবি ও স্কুলের আইডি কার্ড বের করে অশ্রুসিক্ত চোখে বারবার হাত বুলিয়ে দেখছেন বাবা মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব। মেয়েকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন ছিল তাদের। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাঁদের সেই স্বপ্ন।

মেয়ের আইডি কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিহত তানাজের বাবা।

মেয়ের আইডি কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিহত তানাজের বাবা।

তাঁরা জানান, তানাজ খুবই মেধাবী ছিল। সে চিকিৎসক হতে চেয়েছিল। পড়াশোনার প্রতি ওর আগ্রহ আর মনোযোগ দেখে তাঁরা ওকে চিকিৎসকই বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা তাঁদের ছেলে-মেয়ের সাথে সাথে সব স্বপ্নও কেড়ে নিয়েছে।

 

তানাজের মামা সোহাবুর রহমান বাপ্পী বলেন, ‘আমার বড় ভাগনী তানাজ খুবই আদরের ছিল। আমাদের সবার চোখের মনি ছিল সে। কিন্তু এভাবে সে সবাইকে কাঁদিয়ে মারা যাবে কখনোই ভাবিনি।’

শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবু তারেক বলেন, ‘তানাজ খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে খুবই শান্তশিষ্ট ছিল। তানাজ জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এবারের এসএসসি পরীক্ষাতেও সে খুব ভালো করেছে। ফল প্রকাশের পর তার সহপাঠীরাও তাকে স্মরণ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছে।’

 

উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ তানাজের মামা কুয়েতপ্রবাসী সোহাবুর রহমান বাপ্পীকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আনতে স্ব-পরিবারে ঢাকা যাওয়ার পথে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার জামান ফিলিং স্টেশনের সামনে নামে একটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী তানাজ ও তার ছোটভাই আড়াই বছর বয়সী শিশু আনাছ। আহত হয় তাদের বাবা-মাসহ তিনজন।