নিজস্ব প্রতিবেদক: বালি কারবারি বন্ধুর জন্য থানায় তদবীর করতে গিয়ে অপর বন্ধু মামলায় ফেঁসে গিয়ে এবার পুলিশের দুই এসআই’র বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভোক্তভোগী বন্ধু।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশের এসআই সবুর ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)’র এসআই ওয়াসিমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
শনিবার বিকালে জেলা শহরের পৌর মার্কেটের অনলাইন প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভোক্তভোগী বালি ব্যবসায়ীর ঘনিষ্টজন (বন্ধু) মাহফুজুর রহমান সজীব তার দেয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জের ইজারাবিহিনধোপাজান চলতি নদীতে চুরি কওে ড্রেজার মেশিনে খনিজ বালি উক্তোলনকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের অভিযানে দুটি বালি বোঝাই ষ্টিলবডি ট্রলার , দুটি ড্রেজার মেশিনযুক্ত দুটি ট্রলার জব্দ, চুরি করে খনিজ বালি উক্তোলনে থাকা ০৩ জনকে আটক করা হয়।
এরপর জব্দকৃত এসব বালি বোঝাই ট্রলার, ড্রেজার মেশিন যুক্ত ট্রলার আটককৃত তিন জনকে সদর মডেল থানার এসআই সবুরের জিম্মায় দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে এসআই সবুর ট্রলার মালিক জেলার জামালগঞ্জের ফতেহপুর গ্রামের মতিউর রহমানকে মোবাইল ফোনে ৩ লক্ষ টাকা দিলে বালি বোঝাই দুপি ট্রলার, আটক তিনজনকে ছেড়ে দিবে বলে জানান। ট্রলার মালিক দেড় লক্ষ টাকা দিবেন বলে মোবাইল ফোনে সমঝোতা করেন ওই এসআই’র সাথে।
পরবর্তীতে ট্রলার মালিক ভয়ে ওইদিন ঘটনাস্থলে না আসতে পারায় আমার ঘনিষ্টজন (বন্ধু) হওয়ার আমাকে অনুরোধ করার সুবাধে আমার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা মতিউরকে (হাওলাত) হিসাবে দেয়ার শর্তে ওই দেড় লাখ টাকা এসআই সবুরকে আমি নিজে থানায় গিয়ে দেয়ার পর তিনি খনিজ বালি বোঝাই দুটি ট্রলারও আটককৃতদেও থানা থেকে ছেড়ে দেন।
এদিকে যৌথবাহিনীর অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বালিবোঝাই ট্রলারসহ আটককৃতদের তথ্য জানতে চাইলে নানা তালবাহানা শুরু করেন এসআই সবুর।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের জব্দকৃত বালিবোঝাই ট্রলার, আটককৃতদের নিজ জিম্মায় না থাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে ট্রলার, আটকৃতদের উপস্থিত করতে না পারায় বিভাগীয় শাস্তির আওতায় পড়ার আশংকায় এসআই সবুর ফের আমাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন বালি বোঝাই দুটি ট্রলার ফেরত এনে দিতে ও থানা থেকে ছেড়ে দেয়া আটককৃত তিন জনকে ফের থানায় নিয়ে আসতে।
এরপর নিজেকে রক্ষায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমাকে ফাঁসাতে উঠেপড়ে লেগেযান এসআই সবুর ও তার অপর ঘনিষ্টজন সহকর্মী ডিবি পুলিশের এসআই পরবর্তীতে (বদলিকৃত) ওয়াসিম।
ঘুসের টাকা নিয়ে ছুরি করা খনিজ বালি বোঝাই ট্রলার, আটককৃত তিনজনকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে থানায় ডেকে নিয়ে গিয়ে উল্টো আমাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৫জনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়। মামলায় আমাকে করা হয় প্রধান আসামি । বন্ধুর অনুরোধে উপকার করতে গিয়ে পুলিশী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ওই মামলায় আমি দ্বীর্ঘদিন সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে জেল হাজতে ছিলাম। পরে জামিনে মুক্তি লাভ করি।
মামলার এজাহারে এসআই সবুর চুরি করা খনিজ বালি বোঝাই ট্রলার আমার নেতৃত্বে চুরি করে নেয়া হয়েছে বলে আমাকে ফাঁসিয়ে দেন।
আমি ওই হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে নিরপেক্ষ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন পুলিশের সেই দুই এসআই’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান ভোক্তভোগী সজিব।
শনিবার রাতে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই সবুরের নিকট সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বললেন, দুটি ভয়েজ রেকর্ড রয়েছে যা শোনার পর সজীবের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে,সজিব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে সাংবাদিকগণের মাধ্যমে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, তার নিকট থেকে কোন প্রকার টাকা আমি গ্রহন করিনি।
শনিবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বদলিকৃত এসআই ওয়াসিমের নিকট একই সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন অবস্থাতেই ওই বালি বোঝাই ট্রলার ছেড়ে দেয়া ও আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া এমনকি ওই সংক্রান্ত মামলার বিষয়ে কিছুই জানিনা। সজিব সংবাদ সম্মেলনে আমাকে জড়িয়ে অহেতুক মিথ্যাচার করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক্স,অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।