• আজ ৩০শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে ১৬টি নদনদীতে পানি বৃদ্ধি তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

| নিউজ রুম এডিটর ৯:০১ অপরাহ্ণ | আগস্ট ১৪, ২০২৫ সারাদেশ

হুমায়ুন কবির সূর্য, জেলা বার্তা পরিবেশক,কুড়িগ্রাম:
উজান থেকে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম ১৬টি নদ-নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে পানি। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এদিকে ভাঙন প্রতিরোধে বজরা ইউনিয়নে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও পানিবৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ শুরু না করায় চলতি সপ্তাহে ৬টি বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। হুমকীতে রয়েছে ১০টি বাড়িসহ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাইয়ুম সর্দার জানান, গত এক সপ্তাহে কালপানি বজরা ও সাধুয়াদামারহাট গ্রামের শাহজাদি, আশরাফুল, হান্নান, মুকুল, মজিদা ও রোসনার বাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে আরও ১০টি বাড়িসহ একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিতে রয়েছে।

ওই এলাকার সাতালষ্কার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আনোয়ারা জানান, কাল যে রাস্তাদিয়ে স্কুলে গেছি, আজ সেই জায়গা নদীগর্ভে চলে গেছে। যে কোন সময় দুটি স্কুল নদীগর্ভে চলে যেতে পারে।

সাধুয়াদামারহাট গ্রামের ফুলবাবু জানান, নদী আমার ২ বিঘা জমি খেয়ে গেছে। আমার মতো মোফাজ্জল ও আশরাফুলের বসতবাড়ি নদীতে চলে গেছে। সরকারিভাবে আমরা নদী ভাঙন রোধে কাজ চাই।

এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার সাহা জানান, আমি ভাঙন কবলিত বজরা ও থেতরাই ইউনিয়ন পরিদর্শন করেছি। জনপ্রতিনিধিদের তালিকা তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে ৩২০টি শুকনা খাবার প্যাকেট রয়েছে। এছাড়াও জিআর’র চাহিদা প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে দুধকুমার নদীতে পানিবৃদ্ধির ফলে নি¤œাঞ্চলে পানি প্রবেশ করা শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এই নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানিবৃদ্ধির ফলে নাগেশ^রী উপজেলার বল্লভের কাস ইউনিয়নের ফান্দের চরে ৪ থেকে ৫টি নীচু বাড়িতে পানি উঠেছে বলে স্থানীয়রা জনিয়েছে। একইভাবে ওই উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা চরে নীচু এলাকায় অবস্থিত দুটি বাড়িতে পানি উঠছে বলে স্থানীয় যুবক আশরাফুল ও কাদের জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে নাগেশ^রী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিব্বির আহমেদ জানান, আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ খবর নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কিছু নিচু বাড়ি জলবন্দী রয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও জানান, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ও নদী ভাঙন বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পূণর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের কাছে ২ হাজার ৫শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৪৪০ মে.টন জিআর চাল মজুদ রয়েছে। ক্যাশ টাকা রয়েছে ১৪লক্ষ। তালিকা পেলেই আমরা সাথে সাথে উপজেলাগুলোতে বরাদ্দ দিয়ে দিবো। তারপরও প্রতি উপজেলায় ৩২০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার সরবরাহ করা আছে।