• আজ ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 ১০ বছর পর ইসরাইলি কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ফিলিস্তিনি যুবক | এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট প্রশ্ন কোথায় বসে টাকার হিসাব করছেন?–স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা | এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু আজ | যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত ইন্দোনেশিয়া | বাংলাদেশের ট্রানজিট সুবিধা বাতিল নিয়ে যা বললো ভারত | ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক ১৬ এপ্রিল | যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যদূতকে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালেন ড. ইউনূস | সিলেটে লুটের জুতা বিক্রি করতে অনলাইনে বিজ্ঞাপন, আটক ১৭ | বাটা ও কেএফসিতে লুটপাট: সারা দেশে আটক ৪৯ | গাজার চারপাশে এবার ‘কিল জোন’ বানাচ্ছে ইসরাইল! |

কম্পিউটার অপারেটর নুরুলের ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদ!

| নিউজ রুম এডিটর ৪:৩৮ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১ সারাদেশ

২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি নেন নুরুল ইসলাম (৪১)। ওই চাকরি থেকে শুরু করলেও সময়ের পরিক্রমায় ৪৬০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে যান তিনি। এই টাকা দিয়ে তিনি সাভারে একটি রিসোর্ট ও বন্দরে একটি জাহাজ কিনতে চেয়েছিলেন।

এছাড়া দালালিসহ অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থের মাধ্যমে এরই মধ্যে ঢাকায় তার ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট রয়েছে। এছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে মোট ৩৭টি প্লট, বাগানবাড়ি ও বাড়ি রয়েছে। অবৈধভাবে তার অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা।

চাকরির সুবাদে বন্দরের সংশ্লিষ্ট মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে নুরুল ইসলামের। একপর্যায়ে গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। দালালি, পণ্য খালাস, বৈধ পণ্যের আড়ালে অবৈধ মালামাল এনে অল্প সময়ই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান এ কম্পিউটার অপারেটর।

মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরুল ইসলামকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় তার কাছ থেকে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল টাকা, ৩ লাখ ৮০ হাজার মিয়ানমারের মুদ্রা, ৪ হাজার ৪০০ পিস ইয়াবা ও নগদ ২ লাখ ১ হাজার ১৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নুরুল ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে কম্পিউটার অপারেটর থাকার সময় নিজের অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে চোরাকারবারি, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালির কৌশল রপ্ত করে। পরে তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি সিন্ডেকেট গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে একটি দালালি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন নুরুল।

‘২০০৯ সালে সে চাকরি ছেড়ে দিয়ে তারই আস্থাভাজন একজনকে সেখানে নিয়োগ পাইয়ে দেন। আর নুরুল দালালি সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখেন। এভাবে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।’

র‍্যাব জানায়, চাকরি ছাড়ার পর অবৈধ উপার্জন ধামাচাপা দিতে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন নুরুল।

খন্দকার মঈন বলেন, ‘তার সিন্ডিকেটে ১০ থেকে ১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে দালালির কাজ করে। এই সিন্ডিকেট পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালপত্র খালাসে সক্রিয় ছিল।’

সিন্ডিকেটের সহায়তায় পাশের দেশগুলো থেকে কাঠ, শুঁটকি মাছ, বরই আচার, মাছসহ অন্য বৈধ পণ্যের আড়ালে অবৈধ পণ্য আনা হতো বলে জানান র‍্যাবের ওই কর্মকর্তা।

ব্রিফিংয়ে র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার নুরুলচক্রের সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ করত। তাদের চিহ্নিত মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল।

নুরুলের ঢাকা শহরে ছয়টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট আছে। এ ছাড়া সাভার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে জায়গার সন্ধান পাওয়ার কথা ব্রিফিংয়ে জানান র‍্যাবের কর্মকর্তা মঈন।

তিনি বলেন, ‘নুরুলের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সে জাহাজশিল্প ও ঢাকার উপকণ্ঠে বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করেছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘চাকরির পর থেকে নুরুল ইসলাম বন্দরে গাড়ি ও জাহাজের সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণ করতেন, জাহাজ থেকে বিভিন্ন পণ্য খালাসের সময় কর্তৃত্ব করাসহ ভেতরে-বাইরে বিভিন্নভাবে দালালি করত।’

তার সঙ্গে আর কারা জড়িত ছিল? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কম্পিউটার অপারেটর থাকাকালীন বন্দরের বেশিরভাগ লোক তাকে চিনতেন এবং সবার সঙ্গেই তার সুসম্পর্ক ছিল। এ কারণে তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট কাজ করতে সুবিধা হতো। তার সঙ্গে এক-দুজন ব্যক্তি নয়, অনেকেই তার কাজে সহযোগিতা করেছেন।’

তবে র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরুল কারও নাম উল্লেখ করেননি বলে জানান।

পিএন/জেটএস