• আজ ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানিদের হাতে স্বামীকে হারিয়ে ঝুপড়িতে ‘রহিমা’

| নিউজ রুম এডিটর ৪:৩৭ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২ লালমনিরহাট, সারাদেশ

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানিদের হাতে স্বামীকে হারিয়ে ছেলে মেয়েদের মুখে দু’বেলা দুমুঠো খাবারের জন্য বিশ বছর ধরে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হাত পেতে বেড়াচ্ছেন হতদরিদ্র এক বৃদ্ধা।

তিনি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মুন্সী বাজার এলাকার তিস্তা পাড়ের রহিমা বেগম (৬৫) বিশ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।

বৃদ্ধা রহিমার নিজের বলতে কিছুই নেই।

জীবিকার তাগিদে সারাদিন ঘুরেন অন্যের দুয়ারে দুয়ারে। টিনের ঝুপড়ি হলেও উপরের পুরোনো টিন অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে ভরা। ফলে দিনের বেলায় সূর্য শিখা এবং রাতে খোলা আকাশের তারা স্পষ্ট ভাবে চোখে পড়ে।তারপরও তার খোঁজ রাখেন না চেয়ারম্যান মেম্বারা।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন জানান, এমন অসহায় এই বৃদ্ধা রহিমা। সন্তানরা এক বারও ভাবেনি! কোথায় থাকবে তার মা। কোথায় থাকবে তার রেখে যাওয়া শিশুটি। যুবক তিন ছেলে থেকে ও কারো কাছে হয়নি তার ঠাঁই ।
এমন পরিস্থিতে সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য হয়ে ও তিন দফায় সরকারি ঘর হলেও আজও তার ভাগ্যে জোটেনি একটি সরকারি ঘর।

রহিমা বেগম জানায়, “মোর ছেলে মেয়ে থেকেও নাই বিষ বছর ধরি একলায় একলায় এই ধাপরিত থাকোং। মানুষে থাকির জন্যে এইকন্যা করিদিছে। তিন ছেলে থাকিও নাই কাউ পুশে না মোক। বড় ছেলে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে কোন রকম পরিবার চালায়। মেজে ছেলে চায়ের দোকানে কাজ করে। এক ছেলে ভুতছেন মরন বেধিনিয়ে। আর ছোট ছেলে যদিও কিছু দিতো একবছর ধরে করোনার কারনে তার ও সংসার চলে না আর। আর বড় ছেলের মা মরা মেয়ে টা কে মোর কাছত দিয়ে গেছে। চেয়ারম্যান একনা বয়স্ক ভাতা করিদিছে তাও কোর বার টাকা পাং কোন বার না পাং তা মুই চলবার পাং না।
ঝড়ির দিনোত(বৃষ্টির সময়) থাকির সমস্যা হয়।সরকার কত কিছু দিয়ার নাগছে, মোক তা কই কি দেয় বাহে”। কত কষ্ট করি রাইত কাটাং।”

ওই এলাকার কালু নামে এক দিন মজুর কৃষক জানান, ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি তিনি মানুষের বাড়ি বাড়ি হাত পেতে কোন রকম চলেন, মানুষের বাড়িতে ঘুরে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন রকম চলেন। এখন আর ভাল করে কানে শুনতে পারে না। এক প্রকার শ্রাবণ প্রতিবন্ধী তিনি। তাই আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাই এনাকে যাতে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে তুষভান্ডার ইউপি চেয়ারম্যান নুর ইসলাম আহমেদ জানান, এ অসহায় মহিলা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য বলেই মনে করি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, রহিমা বেগমের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

করোনা ভাইরাসের কারণে বদলে গেছে আমাদের জীবন। আনন্দ-বেদনায়, সংকটে, উৎকণ্ঠায় কাটছে সময়। আপনার সময় কাটছে কিভাবে? লিখতে পারেন পিপলস নিউজ‘এ । আজই পাঠিয়ে দিন feature.peoples@gmail.com মেইলে