স্টাফ রিপোর্ট: দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পত্রিকাটির (ষ্টাফ রিপোর্টার) সাংবাদিককে এবার মাদক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চালাণোর অভিয়োগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই’র বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত এএসআই’র নাম মো. সহিদুল ইসলাম (বিপিনং -৮১০০০০০৩৪৪)। তিনি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহারের পর বর্তমানে থানাতেই কর্মরত রয়েছেন।
মাদক মামলায় ফাঁসানোর জন্য পুলিশের দায়িত¦শীল কোন অফিসারকে হোয়াটস আ্যাপে দেয়া ওই ক্ষুদে বার্তাটি ফের ওই এএসআই’ নিজেই তার ব্যাক্তিগত মুঠোফোন থেকে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারকে ফরোয়ার্ড করেন।
এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত রয়েছে।
শনিবার রাতে পুলিশের দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে, গেল ১১এপ্রিল তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি বিট অফিসারের দায়িত্ব থেকে এএসআই শহিদুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে থানায় সংযুক্ত করা হয়।
এরপুর্বে শহিদুল ২০২১ সালের ১৪ মার্চ তাহিরপুর থানায় যোগদান করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি বিট অফিসার হিসাবে যোগদানের পর থেকেই বাদাঘাট ও পার্শবর্তী উওর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্তজনপদ সহ একাধিক এলাকার অপরাধী চক্র, চোরাকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী, ফসলী জমির মাটি কেটে বিক্রয়কারী চক্র, ফুটপাতের ব্যবসায়ী, জাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু পাথর উক্তোলনকারী চক্রের সাথে গোপন সমঝোতায় উপরী আয়ে সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেন। থানায় সংযুক্ত করার পরও স্ত্রী’র বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এমন অজুহাতে অতীতের উপরী আয় রোজগার বহাল রাখতে কৌশলে তিনি বাদাঘাট এলাকায় বাসায় পরিবার পরিজন রেখে মাদক, বিড়ি চোরাচালান, পাথর কোয়ারিসহ অপরাধ প্রবণ এলাকা বাদাঘাট ও উওর বড়দল এলাকাতে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ ও যাতায়াত অব্যাহত রাখেন।
গেল ১৪ মার্চ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ও এরপর ১৭ মার্চ প্রিন্ট ভার্সনে ‘সাদা পোষাকে অভিযান, মারধরে ৩ পুলিশ সদস্য আহত, ১৪ ফেব্রয়ারি দৈনিক যুগান্তরের অনলঅইন ভার্সনে জাদুকাটা নদীর তীরে পাথর কোয়ারি কান্ডে জাদুকাটায় গোপনে লাশ দাফনে পুলিশের সহায়তার অভিযোগ শিরোনামে ও পরদিন প্রিন্ট ভার্সনে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ হলে থানা পুলিশ ও বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির কোন কোন পুলিশ সদস্য সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ক্ষুদ্ধ হয়ে যুগান্তরের প্রতিবেদককে মাদক মামলায় ফাঁসাতেই নানামুখী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন।সংবাদ প্রকাশ কালীন সময়ে থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি বিট অফিসার হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন এএসআই শহিদুল ইসলাম।
অভিযোগ রয়েছে,ব্যাক্তিগত বেতনে এএসআই শহিদুল ইসলাম পেশাদার ইয়াবা কারবারী , দালাল বেশী কথিত মোটরসাইকেল চালক ফারুক, ফয়েজ, আব্দুল লতিফ সহ তিন জন মোটরসাইকেল চালক পোষতেন। এদের দিয়ে এলাকার মাদক, বিড়ি, জুয়া, গবাধীপশু চোরাচালান, জাদুকাটার নদীর ঘাগড়া থেকে গড়কাটি, ঝালোর টেক, আদর্শ গ্রামের পুকুর, ঘাগটিয়া বড়টেক এলাকায় নদীর তীরবর্তী অবৈধ বালু পাথর কোয়ারি মালিকদের সাথে গোপন সমঝোতায় লাখ লাখ টাকা উৎকোচ আদায় করাতেন। মাঝে মধ্যে অভিযানে নামের এএসআই শহিদুল বালু পাথর বোঝাই ট্রলার আটকের পর নগদ দক্ষিণা আদায় করে পাথর বোঝাই নৌকা ছেড়ে দিতেন। বাদাঘাট ও উওর বড়দল এলাকায় ফসলী জমির মাটি কেটে পিকআপ. ট্রলি বোঝাই করে বিক্রির আড়ালে মাসোাহারা আদায় করে আসছিলেন শহিদুল ইসলাম। করোনাকালীন সময়ে বিগত দিনে দৈনিক চুক্তিতে বাজারের দোকাপাঠ খোলা রেখে ব্যবসা চালিয়ে যাবার ইন্দন জুগাতেন শহিদুল ইসলাম। এমন সব অপকর্মে সিদ্ধ হস্ত হয়ে উঠা এএসআই শহিদুল সংবাদ প্রকাশের জের মেটাতে গিয়ে ১৪ এপ্রিল রাতে দৈনিক যুগান্তরের ষ্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অংশ হিসাবে দায়িত্বশীল কোন পুলিশ অফিসারকে হোয়াটস অ্যাপে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণে করেন। একই ক্ষুদে বার্তা পত্রিকাটির স্টাফ রিপোর্টারকেও প্রেরণ করেন শহিদুল।
শনিবার এ বিষয়ে এএসআই মো. শহিদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি প্রথমে ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে বলেন ভাই আপনার সাথে দেখা করে বিস্তারিত বলব।
শনিবার তাৎক্ষণিকভাবে তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার সহ পুলিশের দায়িত্বশীল অফিসারগণকে এএসআই শহিদুল ইসলাম সাংবাদিককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর যে চেষ্টা চালাচ্ছেন সে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতফ তরফদার জানান, নানা অভিযোগ এএসআই শহিদুল ইসলামকে ইতিপুর্বেই বাদাঘাট ফাঁড়ি থেকে থানায় সংযুক্ত করা হয়েছে তারপও সে যে অপতৎরতা চালাচ্চে বলে জেনেছি সেসব বিষয় পুলিশশের উধ্বর্তন কতৃপক্ষকে অবহিত করা করা হবে।