• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন্দ্রীয় কারাগারের পথে হাজী সেলিম

| নিউজ রুম এডিটর ৭:০১ অপরাহ্ণ | মে ২২, ২০২২ আইন ও আদালত, লিড নিউজ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ১০ বছরের সাজা পাওয়া ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদেশের পর পুলিশের পিকআপ ভ্যানে করে তাকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হচ্ছে।

রোববার (২২ মে) বিকেল ৫টার পর হাজী সেলিমকে নিয়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যানটি কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়।

আদালতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কেন্দ্রীয় কারাগারে যাবার কথা ছিল হাজী সেলিমের। তবে এজলাস ছেড়ে নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে পড়ে যান। ভিড় ঠেলে ব্যক্তিগত গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছিলেন না তিনি। পরে বাধ্য হয়েই তাকে পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয় পুলিশ।

এর আগে রোববার (২২ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে তিনি জামিনের আবেদন করে আত্মসমর্পণ করেন। পরে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বিচারিক আদালত ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল রায় দেন। রায়ে হাজী সেলিমের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হয়। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। উভয় দণ্ড একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

অবৈধ সম্পদ অর্জনে হাজী সেলিমকে সহযোগিতা করার দায়ে তার স্ত্রী গুলশান আরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

একই সঙ্গে এই দম্পতির অবৈধভাবে অর্জিত প্রায় ২৭ কোটি টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে হাজী সেলিম এবং ২০১৩ সালে তার স্ত্রী আলাদা আপিল করেন।

হাজী সেলিমের আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি তার সাজা বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে।

দুদকের আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে হাইকোর্টে হাজী সেলিমের আপিলের ওপর আবার শুনানি করতে বলা হয়।

হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর মারা যান।

গত বছরের ৩১ জানুয়ারি হাজী সেলিমের আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়। সঙ্গে তার স্ত্রীর করা আপিলটিও হাইকোর্টে শুনানির জন্য ওঠে।

হাজী সেলিম দম্পতির করা আলাদা আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেয়া ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের জন্য বিচারিক আদালতের দেয়া তিন বছরের কারাদণ্ড থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা মারা যাওয়ায় তার আপিলটি বাতিল (অ্যাবেট) করা হয়।

হাজী সেলিম সম্প্রতি কঠোর গোপনীয়তায় দেশ ছেড়েছিলেন। তার এই দেশত্যাগ নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হয়। দণ্ড নিয়ে তাকে দেশত্যাগে যারা সহযোগিতা করেছিলেন, তাদের শাস্তির দাবি ওঠে। পরে তিনি দেশে ফেরেন।