• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের বাড়ছে তিস্তার পানি, খুলে দেওয়া হয়েছে ৪৪ গেট

| নিউজ রুম এডিটর ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | জুন ২৯, ২০২২ লালমনিরহাট, সারাদেশ

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি হু হু করে বৃদ্ধি পেয়ে জেলার হাতীবান্ধার উপজেরার ৫ ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫ হাজার মানুষ।

পরিবারগুলো ঘর থেকে বের হতে না পারে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন।

তিস্তার নদীর পানি বিপদসীমার ছুঁইছুঁই অবস্থান করছেন। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে সানিয়াজান, তিস্তা ও ধরলা নদীর পারের বাসিন্দারা।

বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে জেলার হাতীবান্ধার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৫৫ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ মোকাবিলায় ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এতে সানিয়াজান ও তিস্তার তীরবর্তী প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া, বড়খাতা, গড্ডিমারী ইউনিয়ন সানিয়াজান নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বুধবার সকাল ৬ টায় থেকে সানিয়াজান নদীর পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়িতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। অনেক পরিবার রান্না করতে না পেরে শিশু সন্তান নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ঘর থেকে বেড় হতে পারচ্ছে না মানুষ। এতে ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সানিয়াজান ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের বুড়িমারী, শ্রীরামপুর, বাউরা, হাতীবান্ধার, ফকিরপাড়া, বড়খাতা, গড্ডিমারী, সানিয়াজান ইউনিয়নের সানিয়াজান নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এদিকে ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়ায় গুচ্ছু গ্রাম যাওয়ার রাস্তা ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। গুচ্ছু গ্রামের ৪০টি পরিবার ঘর থেকে বেড় হতে পারচ্ছে না। পরিবারগুলো মানবতার জীবন যাপন করছে।

ফকির পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য লালচান হোসেন জানান, গতরাত থেকে সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পেছে। এতে আমারও ঘরবাড়িসহ অত্র ওয়ার্ডে প্রায় ৪ থেকে ৫শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন এর ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, হঠাৎ সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধিতে অত্র এলাকায় শত শত মানুষ পানিবন্দী হয়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো ত্রাণ সহায়তা দেওয়া খুবই প্রয়োজন।

পানিবন্দি রমনীগঞ্জ গ্রামের মোজাম্মেল হক (৫৫) জানান, রান্নাঘরে পানি আসায় চুলা ধরার কোন ব্যবস্থা নাই। সকাল থেকে বিস্কিট খেয়ে দিন পার করছি। গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধের রাস্তায় অবস্থান করছি।

ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের প্রায় ৪ ওয়ার্ডে প্রায় ১২ শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ত্রাণ সহায়তার জন্য উপজেলা নির্বাহি অফিসার কে জানিয়েছি।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদৌলা বলেন, ‘উজানে ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে। তবে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহি অফিসার নাজির হোসেন জানান, উপজেলার পানিবন্দি হয়েছে চারটি ইউনিয়নের লোকজন। তবে কি পরিমাণ লোকজন পানিবন্দি হয়েছে তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরিবারগুলোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ত্রাণ সহায়তার জন্য আবেদন করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা পেলে দ্রুত পানিবন্দি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হবে।