• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদ হত্যা বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশি বাধায় এলাকাবাসী! অতঃপর ধস্তাধস্তি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: মাদ্রাসার ছাত্র মুরাদ হোসেন (১১) হত্যা বিচার ও হত্যাকারী মাসুদ রানার জামিন বাতিল এবং হত্যাকারীর সহযোগী পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে নিহতের মা-বাবা ও এলাকাবাসী। এসময় সাংবাদিকরা ভিডিও করলে তাদের উপর চড়াও হন সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান। তিনি সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহে বাধা দেন।

তবে পুলিশের এমন উগ্র আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলেন, পুলিশ কেন সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিবেন। তারা তাদের কাজ না করে সাংবাদিকেরা কি করছে সেই ভিডিও করা নিয়ে ব্যস্তা তারা। আর বিচার প্রার্থীদের সহযোগিতা না করে পুলিশ উল্টো তাদের হেনস্থা করে। এটি সত্যিই খুব বেদনাদায়ক।

আজ রবিবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টায় শহরের চৌরাস্তায় মোহাম্মদপুর ইউনিয়নবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এসময় বিচার প্রার্থীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এবং একপর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়৷

নিহত মুরাদ হোসেন ঠাকুরগাঁও সদরের মোহাম্মদপুর এলাকার দারুল ইসলামের ছেলে এবং মাদারগঞ্জ হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।

পরিবারে সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩ মে সন্ধ্যার দিকে মুরাদ নিখোঁজ হয়। পরের দিন বেলা ১১টায় মাদ্রাসার পাশে এক ভুট্রা ক্ষেতে তার রক্তাক্ত ও ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ দেখতে পাই স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুরাদের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার দু’দিন পর (৬ মে) সদর থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করে তারা বাবা দারুল ইসলাম। মামলার প্রেক্ষিতে (১৬ মে) ওই ইউনিয়নের মহাব্বতপুর এলাকার রমজান আলী ছেলে মাসুদ রানাকে (২১)কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে মুরাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশী রিমাণ্ডে তা স্বীকার করেছেন মাসুদ রানা৷

নিহতের বাবা দারুল ইসলাম জানান, আমার ছেলে হত্যার একমাত্র আসামী মাসুদ ১ মাস ২৩ দিন পরেই জামিন পাই। হত্যা মামলার আসামী এতো অল্প দিনে জামিন পাওয়ায় আমি ও আমার পরিবার, এলাকাবাসী এবং মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক সবাই হতভম্ব৷ জামিনের পর থেকে আমার পরিবারকে মাসুদ ও তার পরিবারের লোকজন প্রতিনিয়তই হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। ফলে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি৷

তিনি আরো বলেন, অন্যদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে গড়মসি করছে। পুলিশের বক্তব্য আসামি আরো আছে৷ আর ধরবো কাল ধরব বলে সময়ে ক্ষেপন করছেন৷ আমি মামলার বাদী হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা থানায় ডেকে আমাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য আদালতে আবেদন করতে বলছেন৷ তাই আমরা নিরুপায় হয়ে আজ রাস্তায় নেমেছি। একমাত্র ছেলে বিচার চাইতে এসে পুলিশও খারাপ আচরণ করছে। তাহলে কথায় গেলে সন্তান হত্যার বিচার পাবো?

মানববন্ধে আসা কয়েকজন জানান, যারা ছোট শিশুকে হত্যা করল তারা আজ দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের কিছু করতে পারে না। আর আমরা হত্যার বিচার চাইলে পুলিশ আমাকে বাধা দিচ্ছে। আটকের হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ ইচ্ছা করলেই বাকি আসামীদের ধরতে পারে। কিন্তু তারা ধরছে না।