• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যসহকারীর নির্যাতনে গৃহবধূ হাসপাতালে

| নিউজ রুম এডিটর ৫:৫৮ অপরাহ্ণ | জুলাই ২০, ২০২৩ লালমনিরহাট, সারাদেশ

আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারীর মধ্যযুগীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে রোকসানা আফরোজ রিতা (২৭) নামে এক গৃহবধূ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বুধবার(১৯ জুলাই) দিনগত রাতে স্বামী শ্বশুর শ্বাশুড়িসহ ৪জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিত গৃহবধু।

নির্যাতিত গৃহবধূ রোকসানা আফরোজ রিতা উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের দুরারকুটি গ্রামের স্বাস্থ্য সহকারী লোকমান হোসেনের স্ত্রী। তিনি পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের ছেলে স্বাস্থ্য সহকারী লোকমান হোসেনের সাথে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ বিয়ে হয় পশ্চিম ভেলাবাড়ি গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে রোকসানা আফরোজ রিতার। বিয়ের পর তাদের সংসারে এক মেয়ের জন্ম হয়। বিয়ের সময় মোটর সাইকেল বাড়ির আসবাবপত্রসহ প্রায় ৫লাখ টাকা যৌতুক নেন লোকমান। এরপরও প্রায় সময় আরও যৌতুকের জন্য চাপ দেন লোকমান ও তার পরিবার।

দাবিকৃত টাকা না পেলে রিতার উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। গত দেড় বছর আগে যৌতুকের টাকা না পেয়ে বেদম মারপিট করে গুরুতর জখম করা হয়। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দিলে সরকার দলীয় নেতার প্রভাবে তা নথিভুক্ত না হলেও জেলার শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে আপোষ করা হয়। এরপরও আচরন পরিবর্তন করেননি স্বামী লোকমান।

গত ১৭ জুলাই পুনরায় ১০ লাখ টাকা চেয়ে রিতাকে তার বাবার বাড়ির উঠানে রেখে আসেন যৌতুক লোভী স্বামী লোকমান। পরদিন ১৮ জুলাই টাকা ছাড়া স্বামীর বাড়ি ফিরলে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। রুমের দরজা বন্ধ করে নগ্ন করে গোপনাঙ্গে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে লোকমান। এক পর্যয়ে সঞ্জাহীন হয়ে পড়লে রুমের দরজা বন্ধ করে রিতাকে রেখে পালিয়ে যায় লোকমান ও তার পরিবার। জ্ঞান ফিরলে রাতে রিতা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

হাসপাতালের বেডে রোকসানা আফরোজ রিতা বলেন, শ্বশুর আওয়ামীলীগের বড় নেতা। তার দাফটে স্বামী প্রায় দিন পাশবিক নির্যাতন করে। বিয়ের সময় ৫লাখ টাকার যৌতুক নিলেও আবার ১০ লাখ টাকার জন্য চাপ দেয়। সেই টাকা না দেয়ার এভাবে মেরেছে তারা। আমাকে হত্যার চেষ্টাও করেছে একাধিকবার। আমার ভাই নেই তাই বাবার সম্পত্তি এখনে নিতে বলে। না নেয়ায় এমন নির্যাতন।

আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত সেবিকা মৌমিতা বলেন, রোকসানার গোপনাঙ্গে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ণ রয়েছে। চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ৯৯৯ নম্বরের খবরে আমরা গৃহবধূকে উদ্ধার করেছি। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।