• আজ ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 মিটারের বেশি ভাড়া নিলে সিএনজি চালককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা | বইমেলায় বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ’ | শাহবাগে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ-সাউন্ড গ্রেনড | যুক্তরাজ্যে টিউলিপের তহবিল জব্দে কাজ করছে দুদক | আবারও শুরু হচ্ছে টিসিবির ট্রাকসেল, মিলবে যেসব পণ্য | অপারেশন ডেভিল হান্ট: সারা দেশে গ্রেফতার ১ হাজার ৩০৮ | বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের মাল্টিপল ভিজিট ভিসা স্থগিত করলো সৌদি আরব | ক্যারিবিয়ান সাগরে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি | ব্যাংক ঋণের সুদহার ও বিদ্যুৎ বিল কমানোর দাবি | তিনবার মামলা হলে ওই গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে পারবে না |

প্যান্টের চেইন খুলে অধ্যক্ষের সামনে উত্তেজিত প্রভাষক, ভিডিও ভাইরাল

| নিউজ রুম এডিটর ১১:২০ পূর্বাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ লালমনিরহাট, শিক্ষাঙ্গন, সারাদেশ

 

আজিজুল ইসলাম বারী , লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের রুমে ঢুকে প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন নিজের প্যান্টের বেল্ট ও চেইন খুলে অধ্যক্ষেকে অশালীন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

 

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মহিষখোচা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ওই শিক্ষকের শাস্তিসহ অপসারণ দাবি করেন।

 

ভিডিওতে দেখা যায়, উত্তেজিত কলেজ শিক্ষক শাহীন নিজের প্যান্টের বেল্ট ও চেইন খুলে অধ্যক্ষের উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘আপনাকে ন্যাংটা হয়ে দেখাবো…’। অধ্যক্ষের কক্ষে কয়েকজন শিক্ষকের সামনে যিনি এ অশালীন আচরণ করেছেন। তবে এসময় অধ্যক্ষের কক্ষে থাকা অপর শিক্ষকরা তাকে এ কাজ করা থেকে প্রতিহত করেন। পরে তিনি হাজিরা খাতায় সই করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।’

 

তাঁর নাম জাহাঙ্গীর আলম শাহীন। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সাচিবিক ও অফিস ব্যবস্থাপনা বিষয়ের জেষ্ঠ্য প্রভাষক। রোববার দুপুরের দিকে অধ্যক্ষ শরওয়ার আলমের কক্ষে তিনি এ কান্ড ঘটান।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কলেজে আসেন জাহাঙ্গীর আলম শাহীন। অথচ সকাল নয়টায় আসার কথা শিক্ষক-কর্মচারিদের। পরে অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে সই করার জন্য হাজির খাতা চান ওই শিক্ষক। এসময় তাকে অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, ‘আপনি যতটার সময় এসেছেন ততটার সময় সই করেন।’ এতে রেগে গিয়ে প্যান্টের চেইন খোলার ঘটনা ঘটান তিনি। এ ঘটনার এসময় আরও কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন সেখানে।

 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহকারী শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘কলেজ আগমনের টাইম অনুযায়ী হাজিরা খাতায় সই করতে বলায় রেগে যান শাহীন স্যার। এরপর বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে নিজের প্যান্টের চেইন খুলতে থাকেন তিনি। কিন্তু আমি তাতে বাঁধা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি।’

 

অপর প্রত্যক্ষদর্শী ক্রীড়া শিক্ষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সময় শাহীন প্যান্টের বেল্ট ও হুক খুলে ফেলেন। একপর্যায়ে তিনি চেইন খোলারও চেষ্টার পাশাপাশি পিন্সিপ্যাল স্যারকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।’

 

অপর প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষক একরামুল হক বলেন, শিক্ষকরা যদি শিক্ষার্থী স্কুলে থাকা অবস্থা তিনি এমন করেন তাহলে শিক্ষকরা কি শিখবে তাদের কাছে। জাহাঙ্গীর আলম শাহীনের এটা চরম অন্যায় হয়েছে। ফলে তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।’

 

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে জেষ্ঠ্য প্রভাষক মো. জাহাঙ্গীর আলম শাহীন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমাকে চাকরিচ্যুতির জন্য আমার বিপক্ষে একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। পুরো অডিও-ভিডিও প্রকাশ করা হোক তাতে আমার দোষ প্রমাণিত হলে আমার শাস্তি হবে।’

 

অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, ‘রোববার আমার কক্ষে জাহাঙ্গীর আলম শাহীন যে আচরণ করেছে সেটা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। সবার সাথে কথা বলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

 

কলেজ সূত্র জানায়, গত ৬ আগস্ট অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন মো. জাহাঙ্গীর আলম ওরফে শাহীনকে। এতে বলা হয় ‘গত ২০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত থেকে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করেছেন। যা প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা বিরোধী। এ ছাড়াও দৈনিক ক্লাস রুটিনে ক্লাস থাকা সত্বেও আপনি ক্লাস করেন না। যার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।’ নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব প্রদান করা না হলে বিধি মোতাবেক পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়।