• আজ ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা যুবদল নেতার, ভিডিও ভাইরাল | পানিহাটা সীমান্তে ১০ বাংলাদেশীকে বিএসএফের পুশইন | ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার | কুড়িগ্রামে তিস্তায় নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার | বাংলাদেশের ওপর ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নির্ভরশীল: নাহিদ ইসলাম | ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু | চট্টগ্রামে প্রথম দুই ব্যক্তির শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত | তাজিয়া মিছিলে হাজারো মানুষ, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী | আজ ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা | নতুন বাংলাদেশে মাফিয়াতন্ত্রের সরকার গড়তে দেওয়া হবে না: নাহিদ ইসলাম  |

চোখে দেখতে পারে না, তবুও থেমে নেই নাবিলা

| নিউজ রুম এডিটর ১:০৮ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৪ লালমনিরহাট, শিক্ষাঙ্গন, সারাদেশ
আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ দুই চোখে দেখতে পারে না, তাতে কি হয়েছে। জীবন যুদ্ধে থেমে থাকেনি প্রতিবন্ধী  দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম (১৮)। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সকালে বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে সে।
সে পড়াশোনা করছে লালমনিরহাট শহরের
চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ বিদ্যালয় থেকেই খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে,
বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নের উত্তর মৃদু কণ্ঠে নাবিলা বলে দিচ্ছেন, আর তা শুনে খাতায় লিখছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন।
শ্রুতলিখন পদ্ধতিতে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের দ্বিতীয় তলায় ১১২ নম্বর কক্ষে তিনি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তাঁর হয়ে অষ্টম শ্রেণির রহিমা খাতুন  নামে এক শিক্ষার্থী নাবিলার খাতায় লিখে দিচ্ছে।
শ্রুতলিখনের কাজ করতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত রহিমা খাতুন। সে লালমনিরহাটের আদিতমারীর সাপ্টিবাড়ি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। রহিমা বলে, ‘নাবিলা আপু উত্তর বলে দেন, আমি খাতায় লিখি। আপু এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলে আমিও খুশি হব। আমার ভালো লাগছে, একজন মেধাবী ছাত্রীকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে সহায়তা করতে পারছি।’
খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আরডিআরএস বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত লালমনিরহাট সদরের হাঁড়িভাঙ্গায় অবস্থিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসনকেন্দ্রে থেকে পড়াশোন করছেন। পুনর্বাসনকেন্দ্রের কাউন্সিলর নুরবানু আক্তার বলেন, শুধু পড়াশোনায় নয়, কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চায় নাবিলা সুনাম অর্জন করেছেন।
খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম বলেন, ‘পাঁচ বছর বয়সে আমি পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলি। পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা করার পরও কোনো ফল হয়নি। এর পর থেকে আমি আরডিআরএসের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসনকেন্দ্রে রয়েছি। আমি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে আমার মায়ের মতো শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চাই। পাশাপাশি কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চাটাও চালিয়ে যেতে চাই।’
লালমনিরহাট চার্চ অব গড উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদার রহমান ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক পার্থ সারথি আচার্য জানান, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী। এসএসসিতে তিনি ভালো ফল করবেন বলে তাঁরা আশাবাদী।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এসএসসি পরীক্ষার্থী খন্দকার নাবিলা তাবাসসুমের জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব ও প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আইয়ুব আলী।
নাবিলার স্কুলশিক্ষক মা খন্দকার ফারজানা আফরিন বলেন, ‘আমার মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে এত দূর এসেছে, সামনে আরও এগিয়ে যেতে চায়। আমার মতো শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চায়। আমি তার জন্য গর্বিত। আপনারা সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন, যেন সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।’