রেলের টাকা যেন গৌরী সেনের। সাড়ে ৬শ কোটি টাকায় কেনা ২০টি ডেমু ট্রেনই বিকল হয়ে পড়ে আছে ওয়ার্কশপে। রেলের মেরামত সক্ষমতা না থাকায় ট্রেনগুলো স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে যাচ্ছে। কেনার সিদ্ধান্তকে ভুল আখ্যা দিয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলছেন, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না করেই কেনা হয় ট্রেনগুলো।
মেরামত সক্ষমতা না থাকায় ডেমু ট্রেনগুলো স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে যাচ্ছে। ছবি: সময় সংবাদ
মেরামত সক্ষমতা না থাকায় ডেমু ট্রেনগুলো স্থায়ীভাবে নষ্ট হতে যাচ্ছে। ছবি: সময় সংবাদ
নাজমুস সালেহী
ডেমুগুলো ২০১৪ সালে কেনা হয় ৬৫০ কোটি টাকা দিয়ে। চার দশক সেবা দেয়ার কথা থাকলেও কেনার পর থেকেই বিকল হতে শুরু করে এগুলো। সরেজমিনে দেখা যায়, পরিত্যক্ত ট্রেনের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে রেলের ওয়ার্কশপ। মেয়াদোত্তীর্ণ নষ্ট ট্রেনগুলো পড়ে আছে ওয়ার্কশপজুড়ে।
দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ঘন জঙ্গলে ঢেকে গেছে ট্রেন; জং ধরে ক্ষয়ে পড়ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। অবহেলা-অযত্নে ট্রেনগুলো এখন স্থায়ীভাবে নষ্টের পথে। কোচ ও ইঞ্জিনসহ গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশগুলোও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ নেই রেলের।
মেকানিকরা বলছেন, দেশে ডেমু মেরামতে নেই কোনো ওয়ার্কশপ; কোনো ট্রেনিংও দেয়া হয়নি তাদের। ফলে প্রযুক্তিগত কোনো ধারণা না থাকায় ট্রেনগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি ডেমুর যন্ত্রাংশও নেই দেশের বাজারে।
রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা না করেই ডেমু কেনা হয় জানিয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীর সহজ স্বীকারোক্তি, ভুল ছিল সিদ্ধান্ত। ভবিষ্যতে কী প্রয়োজন হবে, সেই বিষয়টি তাদেরকে ওই সময় বিবেচনা করা দরকার ছিল।
তবে ব্যর্থতার দায়ভার কেউ নিতে না চাইলেও দেশীয় প্রযুক্তিতে ডেমু মেরামতের কথা ভাবছে রেল। এ বিষয়ে তিনি বলেন,
এই মুহূর্তে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এ বিষয়ে একটা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। আরেকটি পরিকল্পনার কথা ভাবা হচ্ছে। যদি সম্ভব হয়, তবে চালু করা হবে। না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।