• আজ ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ীকে পাথর মেরে হত্যা যুবদল নেতার, ভিডিও ভাইরাল | পানিহাটা সীমান্তে ১০ বাংলাদেশীকে বিএসএফের পুশইন | ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার | কুড়িগ্রামে তিস্তায় নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার | বাংলাদেশের ওপর ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব নির্ভরশীল: নাহিদ ইসলাম | ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু | চট্টগ্রামে প্রথম দুই ব্যক্তির শরীরে জিকা ভাইরাস শনাক্ত | তাজিয়া মিছিলে হাজারো মানুষ, সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী | আজ ১০ই মহররম, পবিত্র আশুরা | নতুন বাংলাদেশে মাফিয়াতন্ত্রের সরকার গড়তে দেওয়া হবে না: নাহিদ ইসলাম  |

বাবায় গড়ে তুলেছে প্রতারণার পাহাড়

| নিউজ রুম এডিটর ৪:০৮ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪ অপরাধ-দুর্নীতি

স্টাফ রিপোর্টার  আরিফুর ইসলাম মুরাদ: 
পুলিশ কর্মকর্তা ছেলে ও পুত্রবধূর ক্ষমতার প্রভাবে বাবার হয়রাণি এবং প্রতারণার শিকার এলাকাবাসী। জাল-জালিয়াতি করে অন্যের জমি দখল, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, সন্ত্রাসী গ্রুপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রাণি, নির্যাতনসহ নানা অভিযোগ বরগুনা সদর উপজেলার লতাকাটা গ্রামের আব্দুল হাই ওরফে দুলাল এর বিরুদ্ধে।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে এসব অভিযোগে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে মোসা: হাচিনা বেগম নামে এক নারী অভিযোগ করেন, আব্দুল হাই দুলাল এর কাছ থেকে ২০১২ সালের ১২ মার্চ বায়না সূত্রে এক একর ২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে নানা কৌশলে আব্দুল হাই টাকা নিলেও নানা কৌশলে জমির কবলা দলিল দেননি। পরে আদালতের স্বরাণাপন্ন হলে বরগুনার সিনিয়র সহকারি জজ আদালত দাতা হইয়া দলিল রেজিষ্ট্রি করে দেন এবং আমি জমি ভোগ দখল করে আসি। কিন্তু সম্প্রতি আব্দুল হাই আমার বর্গাচাষীকে উক্ত জমির ধান কাটতে নিষেধ করে এবং ২০১৭ সালের একটি ভূয়া অঙ্গিকারনামা প্রকাশ করে জমির মালিকানা দাবি করেন। মূলত উক্ত অঙ্গিকারনামায় আমি কোন সহি স্বাক্ষর করি নাই। এ ব্যাপারে গত ১৫ ডিসেম্বর বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-১ এ আব্দুল হাই দুলাল এর জাল-জালিয়াতির বিচার চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন হাচিনা বেগম। ওই আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা থানাকে এজাহারের নির্দেশ দেন।

এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাতাকাটা গ্রামের মো: আবুল কালাম গাজী নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ আব্দুল হাই দুলাল এক একর ৬০ শতাংশ জমি ঠিকা পাট্টা হিসেবে বন্দোক রাখার শর্তে একলাখ ৩০ হাজার টাকা নেন। কিন্তু এরপর দুলাল পেশী শক্তি এবং ছেলে ও ছেলের বৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় ওই জমি ভোগ দখলে দেয়নি। উক্ত জমি অথবা জমির টাকা দুলালের কাছে চাইতে গেলে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন।

এছাড়া একই ইউনিয়নের মনসাতলী গ্রামের মো: হারুন হাওলাদার নামে আরেক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার প্রতিপক্ষের সাথে বিরোধীয় কিছু জমির মামলা পরিচালনার জন্য তিনি (হারুন হাওলাদার) এবং তার ৫জন অংশীদারের কাছ থেকে একটি অঙ্গিকারনামা নেন আব্দুল হাই। এই অঙ্গিকারনামা দিয়ে জাল-জালিয়াতি ও ভূয়া স্বাক্ষর তেরী করে আদালতের মাধ্যমে একটি দলিল তৈরী করেন। এ দলিলের মাধ্যমে আব্দুল হাই ও তার ২ সহযোগী ছগির মৃধা এবং আব্বাস ফকির ২ একর ১৬ শতাংশ জমি অবৈধভাবে ভোগদখল করছেন। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি ব্যক্তিগত বন্দুক দিয়ে ভয়ভীতি দেখান। তার ছেলে ও ছেলের বৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ওই এলাকার আব্দুল মালেক হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, অরুন মৃধা, আল-আমিন সহ একাধিক ব্যক্তি আব্দুল হাই দুলালের বিরুদ্ধে হয়রাণি এবং প্রতারণার অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, আব্দুল হাই এর বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায় না। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনের যথাযথ পদক্ষেপ দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। প্রসঙ্গত: আব্দুল হাই দুলাল এর ছেলে এবং ছেলেও বৌ দু’জনই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল হাই দুলাল সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, তারা আমার কিছু প্রতিপক্ষের পরামর্শে এসব অভিযোগ করছেন। তাছাড়া এ জমিজমা এবং জালজালিয়াতির বিষয়ে যেহেতু আদালতে মামলা চলমান, তাই আদালতে সবকিছু ফয়সালা হবে।

বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হালিম এ বিষয়ে বলেন, অপরাধী যেইহোক তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আদালতের কোন নির্দেশ বা কোন ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।