

দেশজুড়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে ২৯ জুন। ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি শুরু ২৭ জুন থেকে। সেই হিসেবে আর মাত্র একদিন পর ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হচ্ছে। কিন্তু এখনো বোনাস হয়নি ৪ হাজার ৫৯৩টি কারখানার শ্রমিকদের। জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি ৮ হাজার ৯৩১টি কারখানায়। মে মাসের বেতন হয়নি ৩০৩টি কারখানায়।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বেপজা,পাটকল এবং শিল্পাঞ্চল পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অথচ ৬ জুন ঈদুল আজহার ছুটির আগেই শ্রমিকদের ঈদ বোনাস এবং জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেন।
সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহীদউল্লাহ আজিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোনো কারখানাই বেতন-বোনাস দেওয়ার আগে ছুটি দেওয়া হবে না। বেতন বোনাস দেওয়ার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠনের বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অধিকাংশ কোম্পানিতে মে মাসের বেতন দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি, ছুটির আগেই আমাদের সকল কারখানা শ্রমিকদের বোনাস দিয়ে দেবে।
রোববার (২৫ জুন) বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৯ হাজার ৯১৫টি কল-কারখানার মধ্যে ঈদের বোনাস দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৩২২টি কল-কারখানায়। যা শতাংশের হিসেবে ৪৬ দশমিক ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ ৪৫৯৩টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ৪৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
একই সময়ে জুন মাসের ১৫দিনের বেতন দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯৮৪টি কারখানা শ্রমিকদের। অর্থাৎ ৮ হাজার ৯৩১টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয়নি। যা শতাংশের হিসেবে ৯০ দশমিক ৮ শতাংশ বাকি। এছাড়াও মে মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৬১২টি কারখানায়। অর্থাৎ ৩০৩টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতনও দেওয়া হয়নি।
কারখানা মালিকরা বলছেন, ঈদের ছুটির আগে বেতন ও বোনাস দেওয়া হবে। বেতন বোনাস দিয়েই কারখানায় ঈদের ছুটি দেওয়া হবে।
ঈদ বোনাস
৯ হাজার ৯১৫টি কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৭৫৩টি কারখানায় ঈদুল আজহার বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখনও ৪ হাজার ৫৯৩টি কারখানার শ্রমিকরা বোনাসের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এসব কারখানার মধ্যে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে বোনাস হয়েছে ৯৬৩টি কারখানায়। অর্থাৎ ৬৬১টি কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৩১৭টি কারখানার শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখনো ২৮২টি কারখানায় ঈদ বোনাস দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএম) ৩৫৯টির মধ্যে বোনাস দেওয়া হয়েছে ২০৬টিতে। আর বোনাস দেওয়া হয়নি ১৫৩টি কারখানা শ্রমিকদের। বেপজার ৩৯২টি কারখানার মধ্যে ২৯২টির শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে ১০০টি কারখানা।
পাটকল খাতের ৯০টির মধ্যে শ্রমিকদের ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে ৫০টি কারখানায়। এ খাতের বাকি রয়েছে ৪০টি কারখানার বোনাস।
এছাড়া অন্যান্য খাতের ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ৩৩৯৪টির বোনাস দেওয়া হয়েছে। আর বোনাস দেওয়া হয়নি ৩ হাজার ৩৫৭টি কারখানা শ্রমিকদের।
জুনের প্রথম ১৫ দিনের বেতন
ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন পরিশোধ করেছে ৯৪৮টি কারখানা। অর্থাৎ জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন পাননি ৮ হাজার ৯৩১টি কারখানার শ্রমিকরা।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে জুন মাসের বেতন হয়েছে ৮২টি কারখানায়। অর্থাৎ ১ হাজার ৫৪২টি কারখানায় এখনো জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন হয়নি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টির মধ্যে ৫২টি বেতন পরিশোধ করেছে। এখনো বাকি রয়েছে ৬৪৭টি কারখানা শ্রমিকরা, বিটিএমএর ৩৫৯টির মধ্যে ৩০টি কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে কিন্তু ৩২৯টি কারখানায় এখনো বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
বেপজার ৩৯২টি কারখানার মধ্যে ৫১টি কারখানা শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে ৩৪১টি কারখানা শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন।
আর ৯০টি পাটকলের মধ্যে ১৫টি পাটকলের শ্রমিকদের জুনের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এ খাতের ৭৫টি কারখানার শ্রমিকদের বেতন বাকি রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য খাতের ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ৭৫৪টিতে বেতন দেওয়া হয়েছে। আর বেতন দেওয়া হয়নি ৫ হাজার ৯৯৭টি কারখানার শ্রমিকদের।
অর্থাৎ ৯ হাজার ৯১৫টি কারখানার মধ্যে মোট ৯৮৪টি কারখানায় বেতন হয়েছে। যা শতাংশের হিসেবে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। এখনো ৮ হাজার ৯৩১টি কারখানার শ্রমিকদের জুন মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়া হয়নি। শতাংশের হিসেবে ৯০ দশমিক ৮ শতাংশ।
মে মাসের বেতন
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৬২৪ কারখানার মধ্যে মে মাসের বেতন হয়েছে ১ হাজার ৫৫৫টি কারখানায়। অর্থাৎ ৬৯টি কারখানায় এখনো মে মাসের বেতন হয়নি।
নিটওয়ার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে ৬৬৭ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। ৩২টির বেতন পরিশোধ করা হয়নি।
বিটিএমএর ৩৫৯টি কারখানার মধ্যে ৩৪১ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ১৮টির। বেপজার ৩৯২টির মধ্যে ৩৮৯ কারখানার বেতন পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি আছে ৩টির।
তবে পাটকল ৯০টিরই বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য খাতের ৬ হাজার ৭৫১টি কারখানার মধ্যে ৬ হাজার ৫৭০টির বেতন দেওয়া হয়েছে, আর পরিশোধ করা হয়নি ১৮১টির। অর্থাৎ ৩০৩ কারখানা ঈদ বোনাসের পাশাপাশি মে মাসেও বেতন পরিশোধ করেনি।