• আজ ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 সংসদের আসন বাড়িয়ে ৬০০ করার সুপারিশ | মানবিক বাংলাদেশ গড়ার হাতিয়ার শিক্ষার্থীরা; সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আমিনুল হক | বাংলাদেশকে তাবেদারী রাষ্ট্র হিসাবে মনে করতো ভারত –রুহুল কবির রিজভী | রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচি শিথিল, ১১টায় বৈঠক | সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে মামলার ভয়ে যুবককের আত্নহত্যা! | যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না: আসিফ নজরুল | মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ মারা গেছেন | ফ্যাসিস্টরা নববর্ষকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছিল: নাহিদ | দেশ থেকে অশুভ দূর হয়েছে, যতটুকু আছে তাও চলে যাবে: প্রেস সচিব | ড: ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার |

একজন সহকারী জজের দোহাই দিয়ে শিক্ষক চাচার বিরুদ্ধে নানান ধরনের অভিযোগ

| নিউজ রুম এডিটর ৪:০২ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪ সারাদেশ

আরিফুল  ইসলাম মুরাদ : সহকারী জজের প্রভাব খাটিয়ে চাচার বিরুদ্ধে নানান ধরনের অভিযোগসহ বসতঘরে অনাধিকার প্রবেশ করে হামলা, মারধর, লুটপাট ও দখলের অপচেষ্টাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা।

সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বরগুনা সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামের মৃত হযরত আলীর পুত্র আবুল বাশার লতিফ।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে আবুল বাশার লতিফ বলেন, বাবুল আক্তারের বড় ভাইয়ের জান্নাতুল মীম নামের এক মেয়ে সহকারী জজ হিসেবে পিরোজপুরে কর্মরত আছেন। এই সহকারী জজের প্রভাব খাটিয়ে বরগুনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক বাবুল আক্তার অনেকের জমিজমা অন্যায় ও অবৈধভাবে দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকতার আড়ালে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করাই তার একমাত্র ধান্দা। ছাত্র থাকা অবস্থায় ছিলেন একজন সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী। আওয়ামীলীগের দোসর হিসেবে দলীয় প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে গত ১৫ বছরে বেশীরভাগ সময়ে স্কুলের দায়িত্ব পালন না করে কাটিয়েছেন থানা-পুলিশ, অবৈধ দখলদারিত্বের অভিযান ও কোর্ট কাচারির বাড়ান্দায়। স্কুল ও তার বাসায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কোচিং বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায়ও একাধিকবার অভিযুক্ত হয়ে শাস্তিও ভোগ করেছিলেন। এছাড়া ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে কর্তৃপক্ষ এজন্য বহুবার তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি একজন বিকৃত মস্তিষ্কের রোগী। তিনি নিজেকে কবি-সাহিত্যিক হিসেবে জাহির করার জন্য বস্তা পঁচা আজেবাজে কাহিনী নিয়ে তিনি মাঝেমধ্যে দু’একখানা গ্রন্থও প্রকাশ করেছেন। ঐগ্রন্থগুলো নানাবিধ চাপ প্রয়োগ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্রয় করতে বাধ্য করেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, জমিজমা দখলে বিরোধ থাকায় তালতলীতে প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে হয়রানী ও লাঞ্ছিত করার মানসে ঐ স্কুলের জাতীয় পতাকা নামিয়ে স্কুলের পাপোশের নিচে লুকিয়ে রেখে ঐ প্রধান শিক্ষক ও পাপোশের নিচে রাখা জাতীয় পতাকার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি শিক্ষা বিভাগের উর্ধতন কর্তপক্ষর মেইল/মেসেঞ্জার/হোয়াটসআপে পৌঁছে দেয়। বাবুলের একুকর্মে ঐ প্রধান শিক্ষক চরমভাবে নানাবিধ হয়রানীর শিকার হয়েছেন। তিনি শুধু এটা করেই ক্ষান্ত হননি। ঐ প্রধান শিক্ষক ইসরাত জাহান ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মামলা দেন। কাল্পনিক ঐ ছিনতাইয়ের ঘটনা যখন ঘটে তখন স্বামী-স্ত্রী ঐ প্রধান শিক্ষকরা তাদের স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনরত ছিলেন। বাবুল মাস্টারের বৃদ্ধা মা অন্ধ ছিলেন। তিনি বছরখানেক পূর্বে মারা গেছেন। তিনি জীবনের শেষ বয়সে সন্তান ও পুত্রবধুর হাতে চরমভাবে নিগৃহীত হয়ে পরপারে চলে গেছেন। রাতে পায়খানা করতে পারে এই আশঙ্কায় ঐ বৃদ্ধ মহিলাকে কোনদিন রাতের খাবার দাবার দেয়া হয়নি। গর্ভধারিনী মায়ের সাথে এহেন অমানবিক আচরণ কোন বিবেকবান মানুষের পক্ষে একেবারে অসম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা জানান, শিক্ষক বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে ২০/২২ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র আবুল বাশার লতিফের বসতঘরে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রকাশ্য দিবালোকে অনাধিকার প্রবেশ করে হামলা, মারধর, লুটপাট ও দখলের অপচেষ্টা চালায়। হামলাকারী বাবুল আক্তার অত্যন্ত খামখেয়ালী, দাঙ্গা-হাঙ্গামাকারী, অর্থ লোভী ও উগ প্রকৃতির লোক। পেশায় তিনি শিক্ষক হলেও ধুরন্ধর টাইপের লোক। এলাকায় একজন মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। বহু নিরীহ লোক তার হাতে নিগৃহীত হয়েছে।

ভুক্তভোগী আবুল বাশার লতিফ বলেন,
বাবুল আক্তারদ্রের সাথে আমার জমিজমার ভোগদখল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পূর্বে থেকেই বিরোধ চলে আসছে। প্রতিবেশী সোহরাব মাস্টারের বাসায় সন্ত্রাসী চক্র বেশকিছু বাজে চরিত্রের মহিলাদের নিয়ে আস্তানা গড়ে। আবুল মাস্টারের প্ররোচনায় এবং তার নেতৃত্বেই এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। বাবুল মাস্টার একটি জালিয়াত চক্রের সাথেও জড়িত। জাল-জালিয়াতিও তার নেশা। বাবুল মাস্টার দুইটি খতিয়ান থেকে সাত দাগে মহাসড়ক থেকে ১১৬ ফুট ভিতরে রাস্তাসহ ৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তিনি ২০১৮ সালে জমি ক্রয় করার পর থেকেই ভোগ দখল করে আসছেন। বর্তমানে তিনি সামনের অংশ ভোগ দখল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি মূল দলিলের চৌহদ্দি জালজালিয়াতির মাধ্যমে সংশোধন করে আমার দখলীয় সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত করে। সন্ত্রাসীর বাহিনীর সহযোগিতায় দখলের পায়তারা করছেন। জালজালিয়াতির মাধ্যম ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তিনি আদালতে তিন তিনটি মামলা দায়ের করেন। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করে জবর দখলের অপচেষ্টা চালায়। যা আদালত অবমাননার শামিল। বাবুল আক্তার আমার ভোগদখলে বাধা প্রদানসহ আমাকে বিভিন্ন প্রকারের ভয়ভীতিসহ মিথ্যা মামলার হুমকি প্রদান করে। ২৬ ডিসেম্বর দুপুর ২টার সময় আমি ঘরে থাকাকালীন বাবুল আক্তার ২০/২২ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও লাঠিসোটা নিয়ে আমার সাথে অহেতুক তর্কের সৃষ্টি করে আমাকে লাঠিসোটা দিয়া এলোপাথারীভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। সন্ত্রাসীরা আমার ঘরে থাকা ২টি মোবাইল, নগদ ৬০,০০০ টাকা এবং আরো বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। আমি যদি বাড়িতে থাকি তাহলে আমাকে খুন করে ফেলবে বলে হুমকি দেন। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। বর্তমানে বাবুল আক্তাররা এতটাই উত্তেজিত যে তাদের দ্বারা আমার ঘরসহ আমার সম্পত্তিতে যে কোন সময় যে কোন ধরনের ক্ষয়ক্ষতিসহ শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের সম্ভাবনা রয়েছে। বাবুল আক্তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জোরপূর্বক আমার বসতঘর দখল করার পায়তারা করতেছে। এমতাবস্থায় আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছি। আমাদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। আমার বসত ঘরে এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার সময় বাবুল আক্তারের সাথে রুমানা তানভির (৪৫) স্বামী- বাবুল আক্তার, মিলন মাস্টার, ছালমা বেগম (৪২) মোঃ শাহিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৩/১৫ জন ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল বাশার লতিফের স্ত্রী আমেনা বেগম সহ স্থানীয় ভুক্তভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।