

তিন বছরের মধ্যে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘উন্মত্ত’ হয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিন যা করছেন তাতে তিনি খুশি নন বলেও জানান।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় রোববার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আমার সবসময়ই খুব ভালো সম্পর্ক ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে কিছু একটা ঘটেছে। তিনি একেবারে পাগল হয়ে গেছেন! তিনি অকারণে অনেক মানুষকে হত্যা করছেন এবং আমি কেবল সৈন্যদের কথা বলছি না। কোনো কারণ ছাড়াই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ছোড়া হচ্ছে।’
এর কয়েক ঘণ্টা পর নিজের মালিকানাধীন সোশ্যাল মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিন যা করছেন তাতে আমি খুশি নই। তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন এবং আমি জানি না তার (পুতিনের) কী হয়েছে।’
একইসঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘একইভাবে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার দেশের জন্য কোনো উপকার করছেন না, যেভাবে তিনি কথা বলছেন। তার মুখ থেকে যা বেরোয় তা সমস্যার সৃষ্টি করে, আমি এটা পছন্দ করি না এবং এটি বন্ধ করাই ভালো।’
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘নীরবতা’ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আরও আগ্রাসী হতে উৎসাহিত করছে।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা, সেইসঙ্গে সর্ববৃহৎ বন্দিবিনিময়ের মধ্যেই যুদ্ধের তিন বছরের ইতিহাসে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রোববার, কিয়েভ, ঝাইটোমির, খারকিভ, খমেলনিস্কি, ওডেসা, মাইকোলাইভসহ অন্তত ৩০টি শহর লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র। এ ঘটনায় বিভিন্ন শহরে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে, তারা গুলি করে ভূপাতিত করেছে ২৬৬টি ড্রোন এবং ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র।
রাশিয়ার দাবি, তারা দোনেৎস্কের পূর্বাঞ্চলের রোমানিভকা গ্রাম দখলে নিয়েছে। রাশিয়ার এমন বিধ্বংসী হামলার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন।
জেলেনস্কি টেলিগ্রামে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা, বিশ্বের অন্যদের নীরবতা কেবল পুতিনকে উৎসাহিত করে। রাশিয়ার প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলা মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার জন্য যথেষ্ট কারণ।
এই ভয়াবহ হামলার মধ্যেই ২৩ থেকে ২৫ মে এ তিন দিনে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে হয়েছে সর্ববৃহৎ বন্দি বিনিময়। রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেক্সান্ডার ফোমিন জানিয়েছেন, মোট ১ হাজার ৩৫ জন রুশ সেনা ও বেসামরিক বন্দিকে ইউক্রেন থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ইউক্রেনও দাবি করেছে প্রায় ৯৫০ জনকে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া।