• আজ ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 কুমিল্লায় ধর্ষণের শিকার নারীকে নিরাপত্তা ও চিকিৎসার নির্দেশ | প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদে বিএনপি একমত- সালাহউদ্দিন আহমেদ | মধ্যপ্রাচ্যে চার দেশের আকাশসীমা বন্ধ, ঢাকা থেকে সব ফ্লাইট বাতিল  | ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিপর্যস্ত ইসরাইল, নিহত ৩ | সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে এক জন নিহত | সিলেটে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে গিয়ে এক নারী গৃহ পরিচারিকাকে ধর্ষণ | ‘ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের অনেককে আনন্দিত করেছে’ | মাঝ পথে থেমে গেলো কক্সবাজারগামি পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন | ইসরাইলে ৪ শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান, পাঠিয়েছে শত শত ড্রোন | ইরান কখনো পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করবে না: খামেনি |

ভুল চিকিৎসায় একাধিক নারীর মৃত্যু,অর্থের বিমিময়ে ধামাচাপা!

| নিউজ রুম এডিটর ৭:৪৫ অপরাহ্ণ | জুন ৩০, ২০২৫ মুন্সীগঞ্জ, সারাদেশ

 

মোহাম্মদ রোমান হাওলাদার : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত আরাফাত জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়গনষ্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় কুলসুম বেগম (৩৭) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। অতি সম্প্রতি ঢাকার একটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই নারীর মৃত্য হলে গোপনে দুই লাখ টাকায় মিমাংসার মাধ্যমে বিষয়টি ঝামাচাপা দেওয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আরাফাত জেনারেল হাসপাতালে কুলসুম বেগম নামের ওই নারীর জরায়ুর অপসারণ করেন হাসপাতালটির নারী ডাক্তার সাইকা আক্তার নিপা। অপরাশেনের পরে রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, জরায়ুর অপারেশন করতে গিয়ে ভুলক্রমে নাড় কেটে ফেলায় রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায়নি। তাই ওই রোগীকে তড়িঘরি করে ঢাকায় রেফার্ড করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে আরাফাত জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের ভূল চিকিৎসায় উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের ইসলামবাগ গ্রামের ইকবাল খানের স্ত্রী কাজল আক্তার নামে আরো এক প্রসূতি নারীর মৃত্যু হয়। এছাড়া প্রায় ৬ মাস আগে হাসপাতালটির নারী ডাক্তার মনির ভূল চিকিৎসার কারণে জমজ দুটি বাচ্চা মারা যায়। সে সময় জমজ বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনাটি ৫ লাখ টাকায় মিমাংসা করেন ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়রাম্যান আব্দুল মতিন হাওলাদার। এছাড়া হাসপাতালটিতে আগত একাধিক রোগীর ভূল চিকিৎসার অভিযোগ থাকলেও সেসকল ঘটনা অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে জানা যায়, আরাফাত জেনারেল হাসপাতালে প্রতিনিয়ত প্রসূতি নারীদের সিজারিয়েন করা হয়। হাসপাতালের আসা প্রতিটি প্রসূতির চিজারিয়েনের পূর্বে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাবান কেনার জন্য ১ শত টাকা থেকে দেড় শত টাকা নেন হাসপাতালের নারী কর্মচারী ও আয়ারা। অথচ একটি সাবান দিয়ে কমপক্ষে ৫০ টি নবজাতকের গোসল করানো গেলেও প্রত্যেক প্রসূতির পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া সাবান কেনার টাকা তারা নিজেরা পকেটে ভরেন।

নিহত কাজল আক্তারের ভাই আশরাফুল অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনের সিজার করি আরাফাত হাসপাতালে। সিজারের সময় ডাক্তার ঠিক মত রক্ত পরিস্কার করে নাই। ভিতরে বদ রক্ত জমে থাকার কারনে ইনফেকশন হয়ে যায়। পরে এখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর সেখান থেকে আমার বোনকে আদদিন হাসপাতালে নিয়েছিলাম। সেখানে লাইফ সাপোর্টে দুই মাস থাকার পর আমার বোন মারা যায়। পরবর্তীর্তে আমরা মামলা মোকদ্দমায় যেতে চেয়েছিলাম। আমার বোন জীবিত থাকতে বলেছিলো তাকে যেন পর্দার সহিত মাদ্রাসার কবরস্থানে মাটি দেওয়া হয়। মামলা করলে লাশ উঠাতে হবে। এদিকে আবার বোন জামাই মাললার ঝামেলায় যেতে বারণ করায় আমরা আর মামলা মোকদ্দমায় যায় নি। আমার বোনের মৃত্যুর পিছরে হাসপাতালে গাফলতি ছিলো। আপনি নিউজ করেন। যত ধরনের সাপোর্ট লাগে আমরা দিবো।

এবিষয়ে হাসপাতালটির অভিযুক্ত ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় হাসপাতালের ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এধরনের কোন ঘটনা যদি ঘটে, যদি আপনাদের কাছে এমন কোন তথ্য থাকে তাহলে আপনারা রিপোর্ট করেন। যদি আপনাদের রিপোর্টে কোন ত্রুটি থাকে তাহলে প্রয়োজনে আমরা আপনাদের অফিসে প্রতিবাদ জানাবো।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জামশেদ ফরিদী বলেন,আমাদের কাছে যদি ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ অভিযোগ করে তাহলে জেলা সিভিল সার্জনের সাথে পরামর্শ করে আমরা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।