• আজ ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলল আফগানিস্তানের স্কুল, নেই নারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী

| নিউজ রুম এডিটর ৬:১১ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২১ আন্তর্জাতিক, আফগানিস্তান

তালেবান আফগানিস্তানের স্কুলগুলোতে শুধুমাত্র পুরুষ শিক্ষক ও ছেলে শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তাই নারী শিক্ষক ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের ছাড়াই খোলা হয়েছে দেশটির বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

এক বিবৃতিতে তালেবান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসে ফের শুরু করার নির্দেশনা জারি করে। তবে ওই বিবৃতিতে কোনো নারী কিংবা মেয়েদের উল্লেখ নেই বলে শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে।

শনিবারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সব পুরুষ শিক্ষক ও শিক্ষর্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে।

সাধারণত ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে থাকে। এছাড়া অনেক স্কুলেই সহশিক্ষা চালু নেই। তাই মেয়েদের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া তালেবানের জন্য সহজ হয়ে গেছে।

এদিকে আফগানিস্তানের মেয়ে ও তাদের অভিভাবকরা নিজেদের সামনে শুধু অন্ধকারই দেখছে পাচ্ছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এক আফগান কিশোরী জানায়, নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভীষণ চিন্তিত সে। অথচ ওই কিশোরীই এক সময় আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখত বলে বিবিসি জানিয়েছে।

ওই কিশোরী বলেন, সবকিছু ভীষণ অন্ধকার মনে হচ্ছে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে নিজেকে প্রশ্ন করি, কেন আমি বেঁচে আছি? আমার কি বাড়িতে বসে অপেক্ষা করা উচিত যে কখন কেউ দরজায় টোকা দিয়ে তাকে বিয়ে করতে বলবে? এটাই কী নারী হওয়ার উদ্দেশ?

মেয়েটির বাবা বলেন, আমরা মা নিরক্ষর ছিলেন। আমরা বাবা এই নিয়ে তাকে সবসময় কথা শোনাতেন। তাকে বোকা বলতেন। আমি চাইনি যে আমার মেয়ের অবস্থা আমার মায়ের মতো হোক।

কাবুলের ১৬ বছর বয়সী আরেক স্কুলছাত্রীও নিজের দুঃখের কথা জানিয়েছেন। তিনি বিবিসিকে জানান, আমি চিকিৎসক হতে চেয়েছিলাম। আমরা স্বপ্ন ভেঙে গেছে। আমি মনে করি না তারা (তালেবান) আমাদের স্কুলে ফিরতে দেবে। এমনকি যদি উচ্চ বিদ্যালয়গুলো খুলেও দেয়, তারা মেয়েদের শিক্ষিত হতে দেবে না।

এক আফগান স্কুলছাত্রী জানান, তিনি ভেঙে পড়েছেন। সবকিছু অন্ধকারে ঢেকে গেছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে তালেবান নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দিলেও ক্লাসরুমের মাঝে পর্দা ও পোশাকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম চাপিয়ে দিয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়তে না দেওয়ার অর্থ হলো তাদের উচ্চ শিক্ষার পথ বন্ধ করে দেওয়া।

২০০১ সালে তালেবানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আফগানিস্তানের শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীরা অনেক এগিয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতা দখলের পর আগের রক্ষণশীল মনোভাব থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান। কিন্তু তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা সেসবের ইঙ্গিত দিচ্ছে না। বরং তালেবান সেই আগের মতোই রয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পিএন/জেটএস