• আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পলাশবাড়ীতে ইমেজ সংকটে বিএনপির রাজনীতি ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামীরা দায়িত্বে

| নিউজ রুম এডিটর ৭:২৩ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ৬, ২০২২ বিএনপি, রাজনীতি

আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা :: বিএনপির রাজনীতি নানা কারণে আজ প্রশ্নবিদ্ধ রাজপথে থাকা নেতাকর্মীরা নবগঠিত কমিটি স্থান না হওয়ায় ও বর্তমান সময়ে গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা শাখার নবগঠিত কমিটিতে সভাপতি ডাকাতি মামলার আসামী আব্দুস সামাদ মন্ডল ওরফে মারো সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলা মওদুদ হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় ইমেজ সংকটে পড়েছে বিএনপির রাজনীতি। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি শূন্যের কোঠা পৌছেছে বলে দাবী করছেন নেতাকর্মীরা।

গত ১৮ মার্চ উপজেলা থেকে কমপক্ষে ১০ কিঃ মিঃ দুরে হাসবাড়ী হাইস্কুল মাঠে এক জনাকীর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সহ মাত্র দুজন কেন্দ্রীয় নেতা। উপজেলার ত্যাগী ও কারা নির্যাতিত কমপক্ষে শতাধিক নেতাকে বাদ দিয়ে তৈরী কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদন করে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সাবেক সভাপতি শাহ আলম সরকারকে সদর এলাকার সদস্য আছে এরকম খোরা অজুহাত দেখিয়ে মনোনয়ন পত্র না দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় আব্দুস সামাদ ওরফে মারো সামাদ যিনি ট্রাক ডাকাতি মামলার আসামী তাকে সভাপতি ঘোষনা করে এক হাস্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যার ফলে এলাকার সচেতন মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে একই স্থল কারচুপির মাধ্যমে এক সময়ের জুয়ার বোর্ডের জুয়ায় লিপ্ত থাকা উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের বাদশা মেম্বার হত্যাকান্ডের অন্যতম মুল আসামী আবু আলা মওদুদ কে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষনা করে।

একমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাগণ ডাকাতি ও খুনের মামলায় চার্জশীর্টভুক্ত অভিযুক্ত আসামী তারা জেলা বিএনপির সভাপতি ডাঃ ময়নুল হাসান সাদিক সাহেবের অতীব পছন্দের ও আত্মীয়। যিনি এমন একজন রাজনীতিবিদ গাইবান্ধা জেলার সকল সহিংসতা ও নাশকতার মুলহোতাদের একজন হওয়ার পরে আজও তিনি ধরা ছোঁয়ার বাহিরেই রয়েছেন। জেলার হাজার হাজার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মামলার আসামী হয়ে দিনের পর দিন আদালতে ছুটছেন। আর ইনি বগুড়ায় থেকে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির রাজনীতি করছেন।

থানা সূত্রে প্রাপ্ত এজাহার ও চার্জশীর্ট থেকে জানা যায়, গত ৩১/১২/২০০৪ সালের দিবাগত রাতে শিবগঞ্জের ভেন্ডাবাড়ী চাউলের আড়ৎ হতে ১৭১ বস্তা চাউল বোঝাই ট্রাক পাবনার শাহাজাদপুরের উদ্দেশ্যে যাবারকালে মিঠাপুকুর থানার শাল্টি গোপালপুর নামক এলাকায় ২০/২৫ জনের একটি ডাকাত দল রাস্তায় বেরিকেড সৃষ্টি করে ড্রাইভার হেলপারকে মারধর ও অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাউল ভর্তি ট্রাকে ডাকাতি করে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর থানার আঃ সামাদ মন্ডল মারো সামাদসহ বেশ আসামী করে ৩৯৫/৩৯৭ দঃ বিঃ ডাকাতি সংঘটনের একটি মামলা রুজু করা হয় যার নং ০১/০১ তারিখঃ ০১/০১/২০০৫ যাহার পরবর্তী জি.আর নং-০১/২০০৫। মামলা রুজুর পরের দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উল্লেখিত আসামীদের কোমরপুরের বাসাবাড়ীর গুদাম হতে ডাকাতি করা কমপক্ষে ৩ লক্ষ টাকা মুল্যের চাউল জব্দ করে। বর্তমানে মামলাটি সাীর পর্যায়ে চলমান রয়েছে। অন্যদিকে পলাশবাড়ীর মেরীরহাটে জুয়ার বোর্ডের টাকা ভাগাভাগি ও কর্তৃত্ব নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার দ্বন্দে হোসেনপুর ইউনিয়ন পরিষদের বাদশা মেম্বরকে গলাটিপে স্বাসরোধ করে হত্যাকান্ডের তদন্তে আবু আলা মওদুদ কে প্রধান আসামী করে হত্যা কান্ডের চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয় যার মামলা নং জিআর ৪৫৪/১৯৯৭। মামলাটি বর্তমানে চার্জশীর্ট পর্যায়ে চলমান রয়েছে। এছাড়া পলাশবাড়ী থানা সূত্রে জানা যায় আব্দুস সামাদ ওরফে মারো সামাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা নাশকতা ও ছিনতাইসহ ৫ টি মামলা রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা আরো বলেন ,গত ২০০৪ সালে পলাশবাড়ী পৌর শহরে নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা অসÍ্র সহ আটক ও গণধোলাই দেয়। এদিকে সাধারণ সম্পাদক আবু আলা মওদুদ এর নামে আরো ৩ টি মামলা চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আলা মওদুদ জানান, মামলা থাকতেই পারে এ মামলা গুলো আদালতে প্রমাণ হওয়ার পরে অভিযুক্ত বলা যাবে। তার আগে কাউকে অপরাধী বলাটা ঠিক নয়।

উপজেলা বিএনপি কমিটিতে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামীদের নেতৃত্বে এনে ইমেজ সংকটে বিএনপি পড়েছে দাবী খোদ দলীয় নেতাকর্মীদের এমন প্রশ্নের উত্তরে জেলা বিএনপির সভাপতি ডা.মইনুল হাসান সাদিক বলেন, কাউন্সিলরদের ভোটে নেতা নির্বাচিত হয়েছেন এখানে জেলা কমিটির কি করার আছে। আর সারাদেশ জুড়ে আমাদের লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে মামলা বিহীন নেতাকর্মী নেই বললেই চলে৷ রাজনৈতিক ভাবে কমানোর অপচেষ্টা হিসাবে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে অবাস্তব অনেক মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। একটি চক্র দলের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়াতে এমন সব তথ্য দিয়ে মানুষ কে বিভ্রান্ত করছে।

আব্দুস সামাদ মন্ডল ওরফে মারো সামাদ উপজেলার সর্বঙ্গ ভাদুরিয়া শরণ ভাদুরিয়া গ্রামের আফছার আলী ছেলে। ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলা মওদুদ উপজেলার কাতুলী গ্রামের মৃত আঃ কাদের ছেলে।