• আজ ২১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আলুতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না চাষীরা

| নিউজ রুম এডিটর ৮:১৩ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ২৮, ২০২২ সারাদেশ

মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও: গেল বছরের মত এবারও আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষীদের। ফলন কম আর দাম না থাকার কারণে আগাম জাতের আলুতে উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না আলু ঠাকুরগাঁওয়ের চাষীরা। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ হাওয়া ফসলটির সংরক্ষণের জন্য উপজেলাটিতে কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর চরম ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষি শ্রমিকদের নিয়ে গেনুলা জাতের আলু তোলার কাজ করছিলেন বালিয়াডাঙ্গীতে উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আলু চাষী রমজান আলী। তিনি জানান, ৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন তিনি। এক বিঘা জমিতে তার ৬০ কেজি ওজনের ৪০ বস্তা আলুর ফলন হয়েছে। বাজার দর অনুযায়ী এই আলুর দাম ২১৬০০ টাকা। অথচ ৪০ বস্তা আলু উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার টাকা। প্রতি কেজিতে আলু উৎপাদন খরচ প্রায় ১২টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ১৫ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় প্রায় ৫’শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ কমেছে।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলাটিতে গেনুলা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু আলু আবাদ হয়েছে। তিন ধরনের আলুতে বীজের মূল্য এবং পরিচর্যা অনুযায়ী উৎপাদন খরচের বেশ তারতম্য রয়েছে। গেনুলা জাতের আলুতে প্রতি বিঘায় চাষাবাদে ২৮-৩০ হাজার টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলুতে ৩৫-৩৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

আলু চাষী মুনসুর আলী জানান, চলতি মৌসুমে সেভেন ও গেনুলা জাতের আলু আবাদ করেছেন ৪ বিঘা জমিতে। বাজার দর অনুযায়ী প্রতি বিঘা জমিতে কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে তাকে। এদিকে স্থানীয় ভাবে আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা বাধ্য হয়ে খেত থেকে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে অনেক চাষীরাই আলু সংরক্ষণ করতো। বাধ্য হয়ে কম দামে করতে হতো না।

জেলার নারগুন, রায়পুর, চাড়োল, দুওসুও ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চাষীদের নিকট আলু কিনছেন ব্যবসায়ী দুলাল চৌধুরী। তিনি জানান, গেনুলা জাতের আলু ৯ টাকা, স্টিক ও সেভেন জাতের আলু ১২ টাকা কেজি দরে কেনা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে আলুর দাম প্রতি কেজিতে ৫-৭ টাকা কমেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আজিজ জানান, উপজেলাটিতে তুলনামূলক ভাবে আলুর চাষাবাদ বেশি হয়। হিমাগার না থাকার কারণে কৃষকরা ভরা মৌসুমে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কৃষকদের এ সমস্যা আমরা চিহ্নিত করেছি। সমস্যাটি থেকে উত্তোরণের জন্য আলু সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।