• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যাংক ম্যানেজারকে গ্রাহকের জুতা নিক্ষেপ

| নিউজ রুম এডিটর ৩:৩০ অপরাহ্ণ | জুলাই ১৪, ২০২৩ রাজশাহী, সারাদেশ

আলিফ হোসেন,তানোরঃ রাজশাহীর জনতা ব্যাংকের একটি শাখা ব্যবস্থাপকের (ম্যানেজার) বিরুদ্ধে নারী গ্রাহকের সঙ্গে অশোভন ঈঙ্গিত ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহক ম্যানেজার আতিকুর রহমানকে জুতা ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার জনতা ব্যাংক শাখায় এই ঘটনা ঘটেছে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

এদিকে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং ব্যবসায়ী মহল ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ম্যানেজারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন।

অভিযোগে প্রকাশ, দুর্গাপুর পৌর সদর সিংগা গ্রামের বাসিন্দা কাঠালবাড়িয়া শহীদ আবুল কাশেম স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক ও দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগ নেত্রী সারমিন আহম্মেদ পলি। তিনি গত ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে জনতা ব্যাংক দুর্গাপুর শাখায় যান তার ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমাকৃত অর্থ থেকে বছরে চারবার সার্ভিস চার্জ কাটা হচ্ছে কেনো সেটা জানতে।

বর্তমানে ব্যাংকিং নিয়ম-কানুন জানতে ব্যাংকের সহকারী ম্যানেজারের কাছে আবেদন করেন। সহকারী ম্যানেজার এবিষয়ে কিছু জানার প্রয়োজন থাকলে সরাসরি ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এসময় ওই গ্রাহক ম্যানেজার আতিকুর রহমানের গেলে তিনি গ্রাহকে বলেন বছরে দুইবারের বেশী ব্যাংকে কোন গ্রাহকের টাকা কর্তন করা হয় না। তখন গ্রাহক সারমিন আহম্মেদ পলি তার হিসাব নম্বেরর ষ্টেটম্যান দেখাতে চাইলে তিনি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখার ফি বাবদ ১২০ টাকা জমা দিতে বলেন। তাৎক্ষনিক টাকা না থাকায় গ্রাহক ব্যাংকের নীচে এসে টাকা নিয়ে গিয়ে ব্যাংক স্টেটমেন্ট নেয়ার জন্য আবেদন করতে চাই।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় ম্যানেজার আতিকুর রহমান ওই গ্রাহককে অকথ্য, অশ্লীল, অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও অশোভন ইঙ্গিত করেন এবং তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দিয়ে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওই গ্রাহক ম্যানেজারকে জুতা ছুড়ে মারলে জুতা তার মাথায় লাগে।

এদিকে ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে ম্যানেজার আতিকুর রহমান দুপুরের পর ফোনের মাধ্যমে গ্রাহককে ব্যাংকে ডেকে নিয়ে তার কাছে ভুল স্বীকার ও উভয়পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করে নেন। তবে সুশিল সমাজ ম্যানেজারের শাস্তি চাই। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, জনতা ব্যাংকের বর্তমান ম্যানেজারটি আসলেই গ্রাহকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে না। আমি জনতা ব্যাংকের একজন নিয়মিত গ্রাহক ছিলাম আমার প্রতি সপ্তায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লেনদেন হতো। ম্যানেজার আমার সাথেও খারাপ আচরণ করাই আমি ব্যাংক থেকে চলে গিয়ে অন্য ব্যাংকে এখন লেনদেন করি। গ্রাহকদের সঙ্গে অশালীন আচরণকারী এই ম্যানেজারকে দ্রুত অন্য শাখায় বদলি না করলে গ্রাহক সংখ্যা দিন দিন কমতে থাকবে বলে আমার ধারণা। এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক দুর্গাপুর শাখার ম্যানেজার আতিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমার ব্যাংকের গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলির সাথে ব্যাকিং নীতিমালা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হলে গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলির সাথে আমরা নিজেরা ব্যাংকে বসেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করে ফেলেছি।

এ বিষয়ে অশালীন আচরণের শিকার গ্রাহক শারমিন আহমেদ পলি বলেন, জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার আমার সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছে। পরে আমাকে ডেকে ম্যানেজার সাহেব এটা নিয়ে ভুল স্বীকার করে অনুতপ্ত হয়েছেন আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেছে। তবে ব্যাংক ম্যানেজার এ ধরনের ব্যবহার যেন আর কোন গ্রাহকের সাথে না করে সে বিষয়ে তার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।