রাজশাহীর তানোরের দুটি কলেজের ৫টি শূণ্য পদে নীতিমালা লঙ্ঘন এবং আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে গোপণে জনবল নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি রাজশাহীর নিউ ডিগ্রী গভঃ কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে পরীক্ষা গ্রহণের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও অজ্ঞাত কারণে এখানো ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। অন্যদিকে ৫টি পদে একাধিক ব্যক্তি আবেদন করেছেন। কিন্ত্ত অদৃশ্য কারণে সিংহভাগ আবেদনকারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। এতে নিয়োগ কার্যক্রম নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ-অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।স্থানীয়রা এঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।৷ পরীক্ষা যদি না দেন, তবে কি দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতির দিনে মানুষ কি সখে এক হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফ দিয়ে চাকরির আবেদন করবে। এটা অবশ্যই অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে। প্রসঙ্গত, মুন্ডুমালা মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। দায়িত্ব ফিরে পাবার পর আবারো তার বিরুদ্ধে এই নিয়োগ বাণিজ্যের গুঞ্জন উঠেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উপজেলার কিসমত বিল্লি স্কুল এন্ড কলেজের দুটি ও মুন্ডুমালা মহিলা ডিগ্রী কলেজের তিনটি শূণ্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই মোতাবেক বিল্লি কলেজের দুটি পদের বিপরীতে আবেদন পড়ে ২২টি। তার মধ্যে রষায়ন সহকারী ল্যাবে ৯ জন ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান সহকারী ল্যাব পদে ১৩ জন আবেদন করেন। কিন্তু পরীক্ষায় রষায়ন ল্যাবে ৪ জন ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান ল্যাবে ৫ জন, মোট ৯ নিয়োগ প্রার্থী অংশ গ্রহণ করেন।
এবিষয়ে অধ্যক্ষ জামিলুর রহমান বলেন, যেই ২২ জন আবেদন করেছিল, তাদের সবাইকে নিয়োগ পরিক্ষার কার্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ৯ জন অংশ নেয়। সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে লিখিত মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়। তিনি বলেন, কিভাবে নিয়োগ হয় সবার জানা, উপস্থিত থাকতে হবে তাই থাকা লাগে। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনা হয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি জানান কলেজ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না।
তিনি অসুস্থ থাকার কারনে ঘোষণা হয়নি। তিনি তো শনিবার শেষ বিকেলে অসুস্থ হয়েছেন তাহলে ফলাফল ঘোষনা হল না কি কারনে এবং নিজ কলেজ রেখে শহরের কলেজে কেন নিয়োগ পরীক্ষা জানতে চাইলে তিনি জানান ডিজির প্রতিনিধি যেখানে মনে করবেন সেখানেই পরীক্ষা নিতে পারবেন, আর ফলাফল ঘোষনার বিষয়ে কোন সদোত্তর না দিয়ে নিয়োগ কাদের হাতে সবাই জানে বলে এড়িয়ে গেছেন। এদিকে মুন্ডুমালা মহিলা ডিগ্রী কলেজে ৩টি শূণ্য পদের বিপরীতে ৩০টি আবেদন পড়ে, যাচাই বাছায়ে ২৭ টি আবেদন টিকে। পরীক্ষায় অংশ নেয় মাত্র ১০ জন।
পদগুলো হল রষায়ন ল্যাব সহকারী পদে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪ জন, প্রাণী বিজ্ঞান ল্যাব সহকারী পদে ৩ জন ও পদার্থ বিজ্ঞান ল্যাব পদে ৩ জন করে মোট ১০ জন। এবিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ও বিল্লি কলেজে একই সময়ে একই কলেজে ও একই ডিজির প্রতিনিধির মাধ্যমে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অসুস্থ হওয়ার কারনে ফলাফল ঘোষনা করা হয়নি। নিয়োগ পরীক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা হয়েছে, অথচ ফলাফল ঘোষনা করছে না। সভাপতির অসুস্থতার দোহায় দিয়ে আমরা চরম অনিশ্চয়তায় আছি। একাধিক আবেদনকারী জানান, আবেদন করার পর জানতে পারলাম আগে থেকেই সব লেনদেন হয়ে গেছে। এমনকি দরদাম করে প্রার্থী টিক করা হয়েছে। যে বেশি টাকা দিতে রাজি হয়েছে তার চাকরি হবে। তাহলে লোক দেখানো পরীক্ষায় অংশ নিয়ে লাভ কি। যেখানে মেধার কোন মূল্য নেই, মূল্য আছে টাকার মামা খালু আর ক্ষমতার।
যেখানে পিয়ন আয়া পদে ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। তাহলে এসব পদে কত লাগবে বুঝতে হবে। এবিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তিনি নিয়োগ পরীক্ষার সময় উপস্থিত ছিলেন বলে জানান অধ্যাক্ষ জামিলুর রহমান। এবিষয়ে ডিজির প্রতিনিধি রাজশাহী নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসার কালাচাদ শীলের ০১৯৪১ ৩৬০২৯০ মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে অন্য একজন ধরে বলেন স্যার মোবাইলে কথা বলেন না টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি ০২৫৮৮৮৫০৬৩০ টেলিফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন। কিন্ত্ত টেলিফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। এজন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।