• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেপ্টেম্বরে রাজনীতির উত্তাপ

| নিউজ রুম এডিটর ৯:০২ পূর্বাহ্ণ | আগস্ট ৩১, ২০২৩ বিএনপি, রাজনীতি, লিড নিউজ

শোকের মাস আগস্ট শেষে শুরু হতে যাচ্ছে সেপ্টেম্বর। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সেপ্টেম্বর মাসজুড়েই রাজনীতি উত্তাপ ছড়াবে। এ মাসের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ ‘পুরোদমে নির্বাচনি যাত্রা’ শুরু করতে যাচ্ছে। মাসের প্রথম দিন ছাত্রলীগ ৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সমবেত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একইদিন বিএনপি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালিতে বড় জমায়েতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া এ মাসেই সরকার পতনের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন বেগবান করবে বিএনপি। প্রধান দুই দলের অনড় অবস্থান এবং কর্মসূচি ঘিরে রাজনীতির পরিবেশ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নির্বাচনি যাত্রা শুরু করছে আ.লীগ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনীতির মাঠ নিজেদের দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে আরও জোরালো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই ‘পুরোদমে নির্বাচনি যাত্রা’ শুরু করতে যাচ্ছে দলটি। এরই অংশ হিসাবে মাসের প্রথম দিনেই ছাত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে ছাত্রলীগ। এর পরদিন ২ সেপ্টম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশের উদ্বোধন ঘিরেও মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দেবে দলটি। এছাড়া ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প অর্থাৎ মেগা প্রজেক্টের উদ্বোধন ঘিরেও কয়েকটি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনি যাত্রার অংশ হিসাবে খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশ হবে। জেলা পর্যায়েও পালিত হবে এসব কর্মসূচি।

এর বাইরে ঢাকাসহ সারা দেশে ছাত্র সমাবেশ, সুধী সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা ও সেমিনারসহ নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে দল ও সহযোগী সংগঠনের। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের নির্বাচনি প্রস্তুতির পাশপাাশি সংগঠনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করা হবে। একই সঙ্গে, বিএনপি-জামায়াতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড তুলে ধরা এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় প্রত্যেকটি কর্মসূচির দিন নানা বিষয় সামনে এনে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। ১৪ দলীয় জোটের শরিকসহ সমমনা অন্যান্য দল ও সংগঠনকেও মাঠে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, নির্বাচন পর্যন্ত তাদের এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান যুগান্তরকে বলেন, গত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাদের তিনটা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা এবং নিদেজের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব থাকলে সেগুলো দূর করা। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি, হত্যা, নির্যাতনের চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরা। আর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কি উন্নয়ন হয়েছে সেগুলো তুলে ধরা। তিনি আরও বলেন, এই বিষয়গুলো সামনে রেখে আমরা আগস্টজুড়ে কাজ করেছি। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর আমাদের এ কার্যক্রম চলবে। এর মধ্যে ২ তারিখে আমাদের ঢাকা বিভাগীয় সভা হচ্ছে। এভাবে প্রতিটা বিভাগে একটা করে সভা হবে। পরে জেলা পর্যায়েও আমরা সভা করব।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে গণতন্ত্রের পথেই আমাদের হাঁটতে হবে। আমরা আমাদের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই ও সম্পৃক্ত করতে চাই। শোকের মাসের কর্মসূচি হলেও ছাত্র সমাবেশ ঘিরে সারা দেশের তরুণ সমাজকে আরও আগ্রহী করা এবং দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। ২ তারিখে সুধী সমাবেশ হবে। এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের সুফল ঢাকাসহ দেশবাসী পাবে। এই বিষয়গুলো আমরা জণগণের সামনে তুলে ধরতে চাই। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা হতে পারে। এমন ধারণা থেকেই দলের হাইকমান্ড একাধিকবার দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ‘অতীতে বিএনপি নেতারা সহিংস কর্মকাণ্ড করে দেশ ও মানুষের ক্ষতি করেছে। ভবিষ্যতে কেউ যেন আর কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতার মাধ্যমে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক রয়েছেন তারা।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাসী নির্বাচনমুখী দল। আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাস করে এবং ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চায়। নির্বাচন সামনে রেখে অশুভ শক্তির ষড়যন্ত্র চক্রান্ত মোকাবিলার লক্ষ্যে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিগুলো অব্যাহত আছে। এটা নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

প্রতি বছরই আগস্টের ৩১ তারিখে শোক দিবসের বিশেষ সভার আয়োজন করে থাকে ছাত্রলীগ। তবে এবার শোক দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্র সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি। ৩১ অগাস্ট এই সমাবেশ করার পরিকল্পনা প্রথমে নিলেও কর্মদিবসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি এড়াতে তা ১ দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলা ৩টায় এই ছাত্র সমাবেশ হবে। এতে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে নির্বাচনের আগে নিজেদের সক্ষমতার জানান দিতে এতে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষার্থী সমাগম করার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রলীগ। সমাবেশকে সার্থক করার জন্য দেশব্যাপী চালানো হয়েছে প্রচারণা। সমাবেশে সর্বোচ্চসংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে অংশ নেওয়া ইউনিটকে পুরস্কৃত করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও এই ছাত্রসমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনাকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় উপহার দেওয়ার শপথ নেবে বলেও জানান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

ছাত্র সমাবেশকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ছাত্র সমাবেশে অংশ নেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে তারা সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে। জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, পটুয়াখালী জেলা থেকে তিন হাজার লোক লঞ্চে আর বাকি পাঁচশ লোক বাসে ঢাকায় যাবে।

সমাবেশের অভ্যর্থনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব সবুর খান কলিন্স বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে যে-সমাবেশে আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি শিক্ষার্থী সমবেত হবে। যেটি নতুন ইতিহাস তৈরি করবে বাংলাদেশে।

বুধবার বিকালে প্রস্তুতির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ছাত্রলীগের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারা দেশে একটি উন্মাদনার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ছাত্রলীগের সমাবেশের পরের দিন ২ সেপ্টেম্বর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে হবে সুধী সমাবেশ। এছাড়া ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই কর্মসূচি ঘিরে চট্টগ্রামে সুধী সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর বাইরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলে মেট্রোরেলের উদ্বোধন, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, কক্সবাজার-দোহাজারী রেলপথ নির্মাণ, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ এবং আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এসব উদ্বোধন উপলক্ষ্যেও বড় গণজমায়েত ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগ।

আন্দোলনের গতি বাড়াবে বিএনপি

সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছে বিএনপির নেতৃত্বে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। গতি বাড়াতে নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে সাংগঠনিক শক্তি দেখাতে চায় বিএনপি। সেজন্য সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই জোরদার আন্দোলনে নামছে দলটি। এরই অংশ হিসাবে আগামীকাল বর্ণাঢ্য র‌্যালি করবে। মূলত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ কর্মসূচি থেকেই চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে মাঠ তৈরির কাজ শুরু করছেন নেতারা। ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে রাজধানীতে বড় ধরনের জমায়েতের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। সাংগঠনিক জেলায়ও একই ধরনের বার্তা দেওয়া হয়েছে। এদিকে সরকারবিরোধী সমমনা ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিয়ে ছাত্রঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আবারও যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে। এর আগে র‌্যালি ছাড়াও নানা ইস্যুতে কয়েকটি কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। এর মধ্যে সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আবারও বৈঠক করবে দলটি। গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত কর্মসূচি নিয়ে দলের নেতাদের ভাবতে বলা হয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য ছাড়াও চূড়ান্ত কর্মসূচি নিয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনের শুরুতে গণমিছিল, আদালত চত্বরে অবস্থান, সমাবেশ, পদযাত্রার মতো কর্মসূচির প্রস্তাব রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, ‘সরকার পতনের একদফা দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক শক্তি ও দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে আছি; শান্তিপূর্ণভাবে আছি। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতি বলে দেবে, আমরা কখন কী করব।’

নেতারা জানান, ‘২৯ জুলাইয়ের অবস্থান কর্মসূচিতে প্রত্যাশিত ফল আসেনি, এটা হয়তো ঠিক। কিন্তু অর্জনও কম ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানেও বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক মহল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করেছে। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোভাব হলো, এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা-সমালোচনা যেন না হয়। আগামীতে আন্দোলন সফল করতে কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে বলেছে হাইকমান্ড।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘ইতিহাস বলে জনগণের দাবি সফল হতে বাধ্য। আমরা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। এখন আরেকটু ধাক্কা দিলেই সরকার পড়ে যাবে। সময়মতোই আমরা সেই ধাক্কা দেব। জনগণের বিজয় হবেই।’

নেতারা জানান, ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে কর্মসূচি এবার ভিন্নভাবে পালনের নির্দেশনা রয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসাবে সব কর্মসূচি সাজানো হয়েছে। এছাড়াও সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এবং কোনো উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ঢাকা মহানগরের নেতারা জানান, রাজধানীতে র‌্যালি সফল করতে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। বিএনপি ছাড়াও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন পৃথকভাবে সভা করছেন। বিএনপির সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মসূচিতে অংশ নেবে অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। র‌্যালিতে কে কোন জায়গায় থাকবেন তা-ও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরের প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারাও এতে অংশ নেবেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীতে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি শুরু হবে। ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, ইত্তেফাক মোড় হয়ে রাজধানী সুপার মার্কেটে গিয়ে শেষ হবে। ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে বেলা ৩টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে। এতে বিএনপিসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন তাদের স্ব স্ব সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে এতে অংশ নেবেন।

এদিকে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে সরকারবিরোধী সমমনা ছাত্র সংগঠনগুলোকে নিয়ে ছাত্রঐক্য গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতৃত্বে ১৯ সংগঠন এ নিয়ে বৈঠকও করেছে। প্রাথমিকভাবে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য’সহ কয়েকটি নাম প্রস্তাব এসেছে। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে নামার পরিকল্পনা রয়েছে সংগঠনগুলোর। সমমনা ছাত্র সংগঠনের বাইরে ছাত্র ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করছে ছাত্রদল।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল যুগান্তরকে বলেন, ‘দেশ ও জাতির বর্তমান সংকট নিরসনের জন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। সেই লক্ষ্যে ক্রিয়াশীল সব ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ বা যুগপৎ ধারায় আন্দোলনের চেষ্টা করব। প্রাথমিকভাবে ১৯ ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেছি। এতে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রিয়াশীল অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনের বিষয়ে তারাও ঐকমত্যে আছেন। কিন্তু প্ল্যাটফরমটা ঐক্যবদ্ধভাবে নাকি যে যার জায়গা থেকে করবে, তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। কিন্তু সবাই একমত ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য ছাত্র সংগঠনের দায় রয়েছে কাজ করার।’