কাঠালিয়া প্রতিনিধি : এমন একটি খবরের তথ্য সাংবাদিকদের কাছে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এক যুবকের উপর হামলা চালিয়েছে তথাকথিত দন্ত চিকিৎসক শিবানন্দ শিবু। বুধবার (৬সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা সাব রেজিস্টার অফিসের সামনে শিবু ডেন্টাল কেয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত যুবক সফিকুল ইসলাম শাওন কাঠালিয়া উপজেলার দক্ষিণ আউরা সদর গ্রামের মৃত আইউব’আলীর ছেলে। এ ঘটনা এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, এক সময় বরগুনা উপজেলার বেতাগী বন্দর এলাকায় একটি সেলুনে নাপিতের কাজ করতেন অভিযুক্ত শিবানন্দ শিবু। প্রায় এক যুগ আগে সে পেশা ছেড়ে শিবু কাঠালিয়া উপজেলায় এসে দন্ত চিকিৎসকের চেম্বার খুলে বসেন। আর সেখানে নিজেই ডাক্তারি শুরু করেন।
সম্প্রতি, শিবুর অপসিকিৎসার খপ্পরে পড়ে কয়েকজন রোগী মারা যায় – বেকায়দায় পড়েন অনেক রোগী । এরপরে চারদিকে জানাজানি হলে, শিবুর বন্ধু মহল থেকে বেরিয়ে আসে তিনি কখনো ডাক্তার ছিলেন না। আগে তাকে নাপিতের কাজ করতে দেখা গেছে। শিবুর অপচিকিৎসার খপ্পরে পড়ে বেশ কয়েকজন রোগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ সিভিল সার্জন এর কাছে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেননি তারা।
হামলায় আহত ওই যুবক জানান, কয়েকদিন আগে শিবুর অপচিকিৎসার ব্যাপারে আমি প্রতিবাদ করি। এরপর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে আমি তথ্য দেই। সেজন্য শিবু ক্ষিপ্ত হয় বেশ কয়েকদিন যাবত আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। আজ সকালে আমি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে উপজেলা মোড়ে দিকে যাওয়ার পথে শিবু আমাকে তার চেম্বারে ডাক দেয়। আমি ভিতরে প্রবেশ করলেই সে আমার উপর এলোপাথারি হামলা চালায়।
এদিকে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে শিবানন্দ শিবু বলেন, কথা কাটাকাটি হয়েছে কোন হামলার ঘটনা ঘটে নাই।
অপরদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডাক্তার না হয়েও নাপিত পেশা থেকে উঠে আসা শিবু শুধু রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসাই নয়, ‘ডা.শিবানন্দ শিবু’ লিখা ছাপানো কাগজে (প্যাড) রোগীকে ব্যবস্থাপত্রও লিখে দিচ্ছেন।দিছেন এন্টিবায়োটিক মেডিসিন আবার করছেন দাঁতের সার্জারি।
শিবুর বাড়ি কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া গ্রামে।
শিবুর বড় ভাই বাবুল চন্দ্র শীল এবং বাল্যবন্ধু ও সহপাঠী ওবায়দুর রহমান, আব্দুল কাদের এবং এনায়েত হোসেন জানান, বাড়ির পাশে শৌলজালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তিন বার মেট্রিক পরীক্ষা দেন শিবু। সবশেষ ১৯৯১ সনে পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু ওইবারও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে বরগুনা জেলার বেতাগী বন্দরে একটি সেলুনে সাত বছর নাপিতের কাজ করেন। সেখানে থাকাকালীন ওই সেলুনের পাশে থাকা ‘আলম ডেন্টাল কেয়ার’ নামে একটি দন্ত চিকিৎসা কেন্দ্রে অবসর সময় কাটাতো শিবু শীল। আর সেখানের কাজ দেখে দেখে নিজে দন্ত চিকিৎসক হওয়ার সাধ জাগে। দাঁতের চিকিৎসা লাভজনক হওয়ায় তিনি নাপিতের পেশা ছেড়ে নিজ এলাকা ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় এসে চেম্বার খুলে নামের আগে ডাক্তার লাগিয়ে শুরু করেন দাঁতের চিকিৎসা।তার স্ত্রী কাকলী রানী ডাক্তার না হয়েও লিখেছেন ডাক্তার”
নাপিত পেশার কথা স্বীকার করে শিবু বলেন, ‘সেলুনের কাজ ছেড়ে পল্লি চিকিৎসক (এলএমএএফ) কোর্স এবং ডেন্টাল ডিপ্লোমা কোর্স আমি করেছি।