• আজ ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 মাগুরার নোমানী ময়দানে সেই শিশুর জানাজা অনুষ্ঠিত | মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত বিচারের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার | মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে হার মানলেন মাগুরার সেই আছিয়া | এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রি ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না | শাহবাগীদের সতর্ক করে হাসনাত আবদুল্লাহ’র পোস্ট | হাবিবুল্লাহ বাহারের  উপাধ্যক্ষকে কুপিয়ে হত্যা, ফরিদপুর থেকে দম্পতি গ্রেফতার  | গণজাগরণের লাকির গ্রেপ্তারের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল ঢাবি | হত্যাকান্ড ধামাচাঁপা দিতে ওসির ‘জজ মিয়া’ নাটক | নারী নিপীড়ন ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি | শেখ হাসিনা-রেহানা পরিবারের জমি-ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ |

ঢাকা-১১ আসনে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত নৌকার প্রার্থী ওয়াকিল উদ্দিন

| নিউজ রুম এডিটর ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ | জানুয়ারি ৫, ২০২৪ আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

নৌকার প্রার্থী ওয়াকিল উদ্দিন গত কয়েকদিনের নির্বাচনি প্রচারে এই আসনে রীতিমতো গণজোয়ার সৃষ্টি করেছেন তিনি। মনোনয়ন লাভের পর থেকেই রাতদিন তিনি চষে বেড়িয়েছেন গোটা এলাকার অলিগলি। তিনি গণসংযোগ ও প্রচারণায় যেখানেই গেছেন গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি নজর কেড়েছে পথচারীদের।

জননেতা ওয়াকিল উদ্দিনের এই মনোনয়নে ঢাকা-১১ আসনের আপামর জনসাধারণ সেদিন থেকেই উৎফুল্ল ও আনন্দে ভাসছেন। তারা মনে করছেন, দলনেতা শেখ হাসিনা একজন দেশ প্রেমিক সৎ ও নিষ্ঠাবান গণমানুষের প্রাণের ধন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিনকে নৌকা প্রতীক দিয়ে স্থানীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। এটা এই আসনের জনগণের জন্য আশীর্বাদ। ওয়াকিল উদ্দিনের এ প্রার্থিতায় জনগণ নতুন করে স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন, এই এলাকার জনগণ বিশ্বাস করেন ওই ঘোষণার সফল বাস্তবায়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিনই যোগ্যতম নেতা। এ কারণে তার জনসংযোগকালে এই এলাকার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন তার প্রতি। তার পথসভায় দুহাত তুলে প্রার্থনা করছেন সৃষ্টিকর্তার কাছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিনও জনগণের দাবি-দাওয়া পূরণে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি সেবক হতে চাই। ঢাকার মধ্যে এই আসনের উন্নয়ন কম। আছে নানা সমস্যা।’ এলাকার এসব সমস্যা তিনি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

স্থানীয় রাজনীতিকরা জানান, ত্যাগ আর তিতিক্ষা যদি হয় জননেতা হওয়ার মানদণ্ড, তাহলে সেই বিচারে ঢাকা-১১ তে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা ত্যাগী নেতা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. ওয়াকিল উদ্দিন। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের যেমন বীর সেনানী ছিলেন, তেমনই তিনি দীর্ঘ ৫ দশক ধরে রাজপথেরও অকুতোভয় সৈনিক। ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে রাজনীতির হাতেখড়ি, এরপর নানা সংকটে নির্মোহভাবে দলের পাশে থেকেছেন, ছাড়েননি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত। সুদীর্ঘ পথচলায় এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে নানা রকম দায়িত্ব পালন করে জনসেবায় অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন। এ কারণেই পরিবেশবান্ধব উন্নত নগরী গড়ার প্রত্যয়ে ঢাকা-১১ আসনের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে বঙ্গবন্ধু কন্যা তাকেই বেছে নিয়েছেন।

মো. ওয়াকিল উদ্দিন ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’- এই মূল মন্ত্রকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। নিজ জন্মভূমি কালাচাঁদপুর থেকে মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে পায়ে হেঁটে-নৌকায় চড়ে তৎকালীন রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া হয়ে প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম সহযোগিতাকারী দেশ ভারতে যান।

এরপর অনেক কষ্ট উপেক্ষা করে প্রায় ২২ ঘন্টা পায়ে হেঁটে খোলা ট্রাকে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে পাহাড়-পর্বতের উঁচু-নিচু কাঁচা রাস্তায় নামে মাত্র খাবার এমনকি কাঁঠাল খেয়ে ভারতের আসাম প্রদেশের লোহারগড় ট্রেনিং সেন্টারে প্রবেশ করেন। পরবর্তী মুক্তিযুদ্ধ ক্যাম্পে যোগদান করে মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ (সেক্টর কমান্ডার) ও মেজর হায়দারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শারীরিক ও অস্ত্র ট্রেনিং নেন। এরপর তাদের দিক-নির্দেশনা মোতাবেক পাকিস্তানি পাক-সেনাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র অবস্থায় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

যুদ্ধকালীন সময়ে খণ্ডকালীন কমান্ডারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং তৎকালীন পূর্ব বাংলার বিভিন্ন রনাঙ্গণে বীরত্বের সঙ্গে সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে পাকিস্তানিদেরকে পরাজিত করেন। এমনিভাবে জীবনের কঠিন সময়ে পার করে একজন গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ৯ মাসের যুদ্ধের সমাপ্তিতে বিজয়ের বেশে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার মাটিতে পদার্পণ করেন।

জীবন বৃত্তান্ত: মো. ওয়াকিল উদ্দিন ১৯৫৪ সালের ২ জুলাই ঢাকা জেলার অভিজাত এলাকা বারিধারা (তৎকালীন কালাচাঁদপুর) গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবের স্মৃতিগুলো জড়িয়ে আছে ভাটারা, বাড্ডা, রামপুরা, গুলশান, বারিধারা, নদ্দা, কালাচাঁদপুর, শাহাজাদপুর, সোলমাইদ, নয়ানগর, নূরেরচালা, খিলড়ীর টেক, সাতারকুল, বেরাইদ এলাকাকে কেন্দ্র করেই।

তৎকালীন কুর্মিটোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখায় হাতেখড়ি তাঁর। কিশোর বয়স থেকেই দেশামাতৃকার প্রতি অগাধ ভালোবাসা জন্ম নেয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মাঝে। সে সময় থেকেই মাটির মানুষ হয়ে জনগণের জন্য কিছু করার অভিপ্রায়েই মগ্ন ছিলেন তিনি। দেশপ্রেমে উজ্জ্বীবিত হয়ে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। প্রথমে তেজগাঁও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য, সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সদস্য, গুলশান থানা ছাত্রলীগের নেতা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরবর্তীতে গুলশান থানা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি হিসেবেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৬৯ সালের অসহযোগ আন্দোলন এবং ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী কাজে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক জনসভায় হাতে লাঠি নিয়ে যোগ দেন তরুণ ওয়াকিল উদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অনুপ্রাণিত হয়ে অংশ নেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৭!

এতো অল্প বয়সেও যুদ্ধকালীন সময়ে কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা পরবর্তীতেও আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন তিনি। সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালান ওয়াকিল উদ্দিন।

পরবর্তীতে সরকারি তিতুমীর কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগের একজন কর্মী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশ পুনঃগঠনে বঙ্গবন্ধুর ডাকে প্রতিটি লড়াই সংগ্রাম ও আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সনে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারবর্গের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশ নেন ওয়াকিল উদ্দিন। যার ফলে তৎকালীন খুনি মোস্তাক ও জিয়া সরাকারের প্রশাসনের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকতে হয় তাকে। শিকার হন অসংখ্য মামলা ও হামলার। তারপরও জনগণের সেবার রাজনীতি তিনি ছাড়েননি।

এখন তিনি প্রায় ৫০টিরও অধিক সামাজিক, ধর্মীয় এবং শিক্ষামূলক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বিশ্ব বৌদ্ধ শান্তি সংস্থার উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্বরত আছেন। ব্যক্তিগত জীবনে একজন সফল ব্যবসায়ী, প্রচণ্ড পরিশ্রমী, আত্মপ্রত্যয়ী, অত্যন্ত ভদ্র ও বিনয়ী ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত তিনি।