• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮০ বছরের পুরনো মসজিদে রোজাদারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা

| নিউজ রুম এডিটর ৩:৩৪ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ৬, ২০২৪ ইসলাম, ধর্ম, লিড নিউজ

রহমত, বরকত ও নাজাতের পবিত্র মাস রমজান। এই মাসে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আল্লাহর দরবারে নিজেকে সঁপে দেন। সব ধরনের পাপ থেকে বিরত থেকে রহমত অনুসন্ধান করেন বিশ্বের মুসলমানরা।

পবিত্র রমজান মাসজুড়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইসলামি নিদর্শন ঐতিহাসিক মসজিদ নিয়ে বিশেষ আয়োজন করেছে । এই আয়োজনে মধ্যযুগেরও আগে থেকে বর্তমান বাংলাদেশ নামে এই স্বাধীন ভূখণ্ডে নির্মিত মসজিদের তথ্য পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।

আজকের আয়োজনে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ৫ নম্বর নয়ানগর ইউনিয়নের মালঞ্চ জামে মসজিদের তথ্য তুলে ধরা হবে।

জামালপুর জেলা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার ও মেলান্দহ উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবিস্থত মালঞ্চ জামে মসজিদ। এখানে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ তলা বিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদকে ঘিরে পুরো এলাকার দৃশ্যপট বদলে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৪০ সালে আলহাজ আবদুল গফুর মণ্ডল নামে স্থানীয় এক ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিতৈষী সুরকি পাথর দিয়ে তিন গম্বুজবিশিষ্ট ছোট একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৯৮৭ সালে গম্বুজ তিনটি আরও বাড়িয়ে ৭ তলায় রূপান্তর করা হয়। তবে সুদৃশ্য মিনারসহ এটি মোট ১১ তলা।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। অনেকে এসে নামাজও আদায় করেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে।

জুমার দিন প্রায় ১৫০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। প্রতি ওয়াক্তে ২০০ থেকে ২৫০ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। মসজিদের প্রথম তলায় ১৫ কাতার ও দ্বিতীয় তলা থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত ১০টি করে কাতার রয়েছে। প্রতি কাতারে ২২ থেকে ২৫ জন করে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন। এ মসজিদ ঘিরে একটি এতিমখানা, একটি নূরানি মাদ্রাসা ও একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হচ্ছে। পাশেই রয়েছে দাতব্য চিকিৎসালয় ও কামিল (স্নাতকোত্তর) মাদ্রাসা।

তিন গম্বুজের মসজিদটি বর্তমানে ৭তলায় রূপান্তর হয়েছে।

রমজানে এই মসজিদে প্রতিদিন ২ থেকে ৩শ’ রোজাদার ইফতার করেন। আর প্রতি জুমাবারে ৭ থেকে ৮শ’ মুসুল্লি ইফতার করেন।

আরও পড়ুন: মনের আশা পূরণে গায়েবি আরিফাইল মসজিদে ভিড় জমান মুসল্লিরা

মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, রমজানে মুসল্লিদের ভিড় অনেক বেড়ে যায়। মসজিদের পুরোটাই মুসল্লিতে পূর্ণ থাকে। এছাড়া রমজানে বিশেষ আয়োজন থাকে নারী-পুরুষ সবার জন্য। এছাড়া এখানের ইফতার আয়োজনে পুরো অর্থ দেয়া হয় মসজিদ কমিটি থেকে। এ বছর রমজানে ইফতার বাবদ ১৫ লাখ টাকা বাজেট দেয়া হয় বলেও জানান তিনি।

মালঞ্চ গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, আমার বাপ দাদারা বলে গেছেন, মসজিদটি অনেক পুরাতন। ব্রিটিশ সরকারের সময় ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি সংস্কার করে ৭তলা করা হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মুসুল্লিরা আসেন এই নান্দনিক মসজিদে নামাজ পড়তে।

মসজিদে দেখা মিলে দিনাজপুর থেকে আসা সাত্তার নামের এক মুসুল্লির। জুমার নামাজ শেষ করে মসজিদের ভেতরে বসে তিনি সুন্দর কারুকাজ দেখছিলেন।

সময় সংবাদকে তিনি বলেন, অনেক দিনের আশা ছিল এই মসজিদে নামাজ পড়বো। আজ আশা পূরণ হয়েছে। এই মসজিদের কথা অনেক শুনেছি। আজ নিজে চোখে দেখলাম মনের আশা মিটলো।