আজিজুল ইসলাম বারী, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে চিনা বাদাম চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন জেসমিন আক্তার। তিন মাস আগে লাগানো বাদাম এখন ঘরে তুলছেন তিনি। বাড়ির পাশের জমিতে ধান চাষ না করে কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষিতে নারী উদ্যোক্তা জেসমিন।
জেসমিন আক্তার উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের পূর্ব চলবলা সতীরপাড় এলাকার ওছমান গণির মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জেমসিন আক্তার এ বছর ৩০ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে বীজ সহ ১৫ হাজার টাকা। প্রতিবছর তিনি বাড়ির পাশে উচু জমিতে বাদাম চাষ করেন। পুরুষ চাষিদের সাথে পাল্লা দিয়ে একজন নারী হয়ে তিনি গত ৫ বছর ধরে বাদাম, ভুট্টা ও ধান সহ সাথী ফসল চাষাবাদ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। জীবন-যুদ্ধে তিনি একজন সংগ্রামী নারী। এ বছর আবহাওয়া অনুকুল থাকায় জেসমিন আক্তারের বাদামের ফলন ভালো হবে আশা করছেন।
জেসমিন আক্তার বলেন , আমার স্বামী একজন প্রবাসী। আমি বসে না থেকে কৃষি কাজ করছি। এতে পরিবারে বাড়তি আয় হচ্ছে। দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ হচ্ছে। প্রবাসে থেকেও আমার স্বামী সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে কৃষি কাজে। ছোট বেলা থেকেই কৃষিকাজ আমার ভালো লাগে। শখের বসে অনেক ধরনের শাক সবজি আবাদ করতে করতে এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এ বছর বাদামের পাশাপাশি ফুল কপি, পেয়াজ, রসুন, তিল সহ বেশ কিছু সবজি চাষাবাদ করেছি। এখন ক্ষেত থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছি। গত বছর বাদাম ১২ হাজার /১৩ হাজার টাকা মন বিক্রি করেছি। আমাদের এলাকায় বাদাম চাষ কম হয় তাই দাম মোটামুটি ভালো হবে আশা করছি। বাদাম তোলা শেষ হলে ভূট্টা চাষ করবো এই ক্ষেতে। তিনি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষি কাজের সব ধরণের সহযোগিতার জন্য সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
স্থানীয় আলাল মিয়া জানান, জেসমিন একজন পরিশ্রমী নারী। তিনি জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলের মাঠে সময় দেন। কৃষি কাজে শ্রমিক নেন পাশাপাশি সে নিজে কাজ করে। কৃষি কাজের পাশাপাশি হাস, মুরগী ও ছাগল লালন পালন করে সফল হয়েছে জেসমিন। এভাবেই একজন নারী হয়েও মাঠে ময়দানে লড়াই সংগ্রাম করেই যাচ্ছেন তিনি। তার এধরনের কার্যক্রম দেখে এলাকার অনেক নারী উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কৃষি কাজে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানায়, জেসমিন আক্তারের মতো নারীরা কৃষি কাজে এগিয়ে আসলে কৃষিতে আমূল পরিবর্তন আসবে। সেই সাথে কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে নারীদের যেমন কৃষির উপর আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে বাড়বে কৃষি উৎপাদনশীলতাও। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহায়তা দেয়া হবে। মাঠ পর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে।