• আজ ২৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম
 প্রধান ফটকে তালা দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা | ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব | ভারত বেড়া নির্মাণ বন্ধে বাধ্য হয়েছে বিজিবির শক্ত অবস্থানে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা | গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় একাত্মতা কুবি শিক্ষকদের | গণহত্যার দায়ে কনস্টেবল সুজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ | সাকিব ও লিটনকে বাদ দেয়ার যে ব্যাখ্যা দিল বিসিবি | ‘জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন একসাথে করা বাস্তবসম্মত নয়’ | সীমান্তে ফের উত্তেজনা, বিএসএফের নতুন সিদ্ধান্ত | ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে নৈশভোজ আ. লীগের পলাতক নেতার  | ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম ফেরত চেয়ে বাকৃবিতে বিক্ষোভ |

জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলো শেরপুরের ছানার পায়েস

| নিউজ রুম এডিটর ৮:২১ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ৫, ২০২৪ ভিন্ন স্বাদের খবর

 

রাকিবুল আওয়াল পাপুল, শেরপুর জেলা প্রতিনধিঃ
শেরপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী ‘ছানার পায়েস’ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বীকৃতির সনদ পান জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।

স্বীকৃতির সনদ হাতে পেয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের সাথে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘জিআই পণ্যের স্বীকৃতি মেলায় আমরা খুব খুশি। এতে উৎসাহ পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, ক্রেতাসহ শেরপুর জেলাবাসী। এর ফলে জেলার ঐতিহ্য ও সুনাম বৃদ্ধি পাবে।’

জানা যায়, খাটি গরু দুধ প্রথমে উচ্চ তাপমাত্রায় জ্বাল দিয়ে ক্ষীর তৈরি করা হয়। এরপর আলাদাভাবে দুধ থেকে ছানা কেটে তাতে সামান্য ময়দা মিশিয়ে ছোট ছোট গুটি তৈরি করা হয়। গুটিগুলো চিনির শিরায় ভিজিয়ে আগে প্রস্তুত করে রাখা ক্ষীরে ছেড়ে দেওয়া হয়। অল্প আঁচে কিছুক্ষণ জ্বাল দিলেই তৈরি হয়ে যায় সুস্বাদু ছানার পায়েস।

শুরুতে শেরপুরের হাতে গোনা ২/১টি দোকানে এই মিষ্টি তৈরি হতো। কিন্তু দিন দিন এ মিষ্টির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন জেলা সদরেই ২০টির বেশি দোকানে এই মিষ্টি তৈরি হয়। এ ছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও নিয়মিত তৈরি হয় এই সুস্বাদু ছানার পায়েস।

ছানার পায়েসের কারিগর কালিপদ ঘোষ বলেন, ‘আমাদের এখানে খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি করা হয় ছানার পায়েস। তাই স্বাদটা একটু ভিন্ন, চাহিদাও ব্যাপক। এক কেজি ছানার পায়েস তৈরি করার জন্য দুই কেজি দুধ, আধাকেজি চিনি, সামান্য পরিমাণ ময়দা ও ১০-১৫ গ্রাম এলাচ লাগে।’

বর্তমানে শেরপুর শহরের চারু সুইটস, অনুরাধা, দুর্গাচরণ মিষ্টান্ন ভন্ডার, প্রেমানন্দ গ্র্যান্ড সন্স, অমৃত গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার, নন্দ গোপাল, মা ভবতারা মিষ্টান্ন ভান্ডার, হোটেল আবির নিবির, ও বল্লব মিষ্টান্ন ভান্ডারে ছানার পায়েস পাওয়া যায়। এছাড়া জেলার পাঁচ উপজেলাতেও বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে ছানার পায়েস বিক্রি হয়।

জমিদার আমলেও তৎকালীন জমিদাররা এখান থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে এই মিষ্টি কলকাতায় নিয়ে যেতেন। এখনও শেরপুরে কেউ আসলে ছানার পায়েস না খেলে অতৃপ্তিই থেকে যায়। বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই মিষ্টি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়নের কোনো জুড়ি নেই। শুধু শেরপুরে নয়, সারা দেশেই রয়েছে এই মিষ্টির ব্যাপক চাহিদা।

গুণে ও মানে অনন্য শেরপুরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন ছানার পায়েসকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য গত জানুয়ারি মাসে জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়ন কমিটির সুপারিশ পাঠায় শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রণালয়ে।

এ সুপারিশের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি যাচাইবাছাই করে ৪৪তম জিআই পণ্য হিসেবে শেরপুরের ছানার পায়েসকে স্বীকৃতি দেয়।

অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বতাধিকারী বাপ্পি দে বলেন, ‘ছানার পায়েস জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা খুব খুশি। কারণ আমরা এর জন্য আগে থেকেই দাবি করে আসছিলাম। শেরপুরের যেকোনো মিষ্টির বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো খাঁটি গরু দুধের। এ ছাড়া দেশের অন্যসব স্থানের চেয়ে দামও অনেক কম। বর্তমানে প্রতিকেজি ছানার পায়েস ৩৮০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জন্মদিন, ঈদ, বিয়েসহ বিভিন্ন পার্টিতে ছানার পায়েসের প্রচুর অর্ডার আসে।’

মিষ্টি কিনতে আসা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘আমাগো শেরপুরের ছানার পায়েস জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাইছে শুইনা খুব খুশি হইছি। তাই আজ ছানার পায়েস কিনতে আইলাম।’

এর আগে শেরপুরের তুলশিমালা ধানের চাল জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ নিয়ে জেলার দুটি পণ্য জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল।