

রাফি হোসেন কুবি প্রতিনিধি:কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ উদযাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী নানা আনন্দঘন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী এই আয়োজন করা হয়েছে।
দিনের শুরুতেই সকাল সাড়ে ৯ টায় বর্ষবরণ শুভাযাত্রা বের হয়। শুভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বর্ষবরণ মেলাতে গিয়ে শেষ হয়। এরপর ১০ টায় ছেলেদের মোরগ লড়াই ও মেয়েদের মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করে।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে লোকগান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি এবং নাটিকা। এছাড়াও, নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বসানো হয় পিঠাপুলির স্টল। যেখানে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পিঠা যেমন পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা ও মালপোয়া পরিবেশন করা হচ্ছে।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘আমাদের বাঙালিদের জন্য এবারের পহেলা বৈশাখ দেশ গড়ার এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। বিগত বছরের ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত হয়ে, আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার — সেটি এই নতুন বছরের প্রভাতে হতে পারে এক ভিন্ন শপথের সূচনা। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে আমরা যেন সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি। এই আনন্দঘন শুভযাত্রা এবং নববর্ষ বরণ উৎসবের মধ্য দিয়ে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও কাজ করে যাচ্ছে একই অঙ্গীকারে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও এই পথচলার অংশীদার। আমরা চাই নতুন সূর্য নতুন আলো আমাদের এই নতুন বছর কাটবে ভালো।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের এই আনন্দঘন মুহূর্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। অল্প সময়ের মধ্যে এতো সুন্দর আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য যাতে কখনো হারিয়ে না যায়, সেদিকে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই স্বাধীনতাকে শক্তি ও প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে দেশ ও জাতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই আয়োজন নবপ্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগ্রত করবে।’
উপচার্য ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। বাংলা নববর্ষ এদেশের সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা। এই উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। অল্প সময়ের মধ্যে এত সুন্দর ও প্রাণবন্ত আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। নানা রকমের স্টল এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন এই উৎসবকে আরও বর্ণিল করে তুলেছে। আমরা সকল স্টল ঘুরে দেখবো এবং নববর্ষের এই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নেব।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হওয়ায় পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।