বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি জেগে উঠছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে নতুন করে কমিটি গঠন করা হচ্ছে, এতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য আবার তাদের (সরকার) হৃৎকম্প উপস্থিত হয়েছে। এ জন্য তারা বিএনপির ওপর চড়াও হয়ে আক্রমণ করছে। সে জন্য আবারও ঘরে ঘরে গিয়ে পুলিশি আক্রমণ চলছে। হয়রানি হচ্ছে, তল্লাশি চলছে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় নেমে স্লোগান দিতে হবে জোরে জোরে। তাহলেই হবে কাজ। সেটার জন্য প্রস্তুতি নাও। সময় এসেছে উঠে দাঁড়ানোর। সময় এসেছে সরকারকে পরিষ্কার করে বলে দেওয়ার যে তোমাকে আমরা আর চাই না। এখন বিদায় নিতে হবে এবং নির্বাচন দিয়ে দিতে হবে।’
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে করোনা ও ডেঙ্গু হেল্প সেন্টারের উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নেতার কথা বলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব। নেতা তো একজন আমাদের বাংলাদেশে- বেগম খালেদা জিয়া। তিনিই একমাত্র নেত্রী যিনি স্বৈরাচারকে পরাজিত করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখনো গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে, লড়াই করতে গিয়ে গৃহে অন্তরীণ হয়ে আছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বেআইনিভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকার টিকতে পারবেনা দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে কোনো স্বৈরশাসক, একনায়ক টিকে থাকতে পারেনি। জনতার উত্তাল রোষে তাদের পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারও টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন দিন। অন্যথায় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘১৯৭৫ সালে যখন বাকশাল হয়েছিল, তার আগে এক ব্যক্তির পূজা চলছিল। আজকে আবার একইভাবে এক ব্যক্তির পূজা শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবারের পত্রিকা দেখলে বোঝা যায়, কীভাবে সব গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আবার তারা পুরোনো স্লোগান নিয়ে এসেছে, এক নেতা এক দেশ, হাসিনার বাংলাদেশ।’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হয়েছে’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘করোনার টেস্ট, করোনার টিকা সংগ্রহ, বিতরণসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে কী কাণ্ড তারা ঘটিয়েছে, আপনারা নিজেরাই সব দেখেছেন। আজ তারা করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। শুধু করোনা নয়, তারা আজ গোটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলেছেন। এখন যদি কেউ হঠাৎ অসুস্থ হন, জরুরিভাবে হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পড়ে, অন্য কোনো রোগেও হাসপাতালে আপনি কোনো চিকিৎসা পাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ নয়, বাংলাদেশে সব ক্ষেত্রে একটা চরম অরাজকতা, দুর্নীতি ও নৈরাজ্য বিরাজ করছে। কারণ, যারা দেশ চালাচ্ছেন এখন, তারা দেশ চালানোর জন্য জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হননি। ফলে কোনো জবাবদিহিতা নেই।’
রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ডেঙ্গুতে মানুষজনের আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুবরণ করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এজন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন তিনি।
পিএন/জেটএস