• আজ ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁর মান্দায় রানা হত্যা মামলার আসামি মিজান গ্রেফতার

| নিউজ রুম এডিটর ৫:২৬ অপরাহ্ণ | ডিসেম্বর ২২, ২০২১ আইন ও আদালত

মাহবুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দায় চাঞ্চল্যকর এমরান হোসেন রানা (৩৮) হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মিজানুর রহমান রঞ্জুকে (২৭) তার বাড়ি থেকে
গ্রেফতার করেছে মান্দা থানা পুলিশ। মিজানুর মান্দার সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরুজ্জামান মাস্টার হত্যা প্রচেষ্টা, ধর্ষণ চেষ্টা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনসহ প্রায়
৪টি মামলার আসামী।

বুধবার (২২ডিসেম্বর) সকালে আদালতের মাধ্যমে মিজানুরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলায় অন্যদের সাথে তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দু এবং ছোট ভাই রায়হানও
এজাহারভুক্ত আসামী। মিজানুর গ্রেফতার হওয়ার খবরে সতীহাট বাজারে মিস্টি বিতরণ করেছে স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে মারপিট-খুনজখম,সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি সহ স্থানীয়দের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা হত্যাকারী মিজানসহ সংশ্লিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১২ নভেম্বর রাতে উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী
বাবুলের সমর্থক মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসা শিক্ষক শ্রীরামপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে মাওলানা সাইফুল ইসলাম শান্ত (৩৫) এর ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হানিফ উদ্দিন মন্ডলের কর্মী সমর্থকরা। এঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল তার কর্মী সমর্থককে মারপিটের প্রতিবাদে সমর্থকদের নিয়ে সতীহাট বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থান নিলে আবার হামলার ঘটনা ঘটে।

এসময় শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুলের সমর্থক এমরান হোসেন রানাকে মিজানুর রহমান ও তার বাবা রফিকুল ইসলাম চান্দুসহ অন্যান্যরা বিভিন্ন রকমের ধারালো অস্ত্র ও হকিস্টিক দিয়ে উপর্যপরি আঘাত করে। এতে রানার মৃত্যু হয়েছে জেনে তারা তাকে ফেলে চলে যায়।

স্থানীদের সহায়তায় মৃতপ্রায় অবস্থায় রানাকে প্রথমে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল ও পরবর্তীতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ওই সংঘর্ষে উভয়পক্ষের আট জন আহত হন।

এই ঘটনায় নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে ১৯ নভেম্বর মান্দা থানায় ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০২/৩০৭/১১৪/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন মঙ্গলবার(২১ ডিসেম্বর) বিকেলে মান্দা উপজেলার গনেশপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে। নিহত রানার মা রেজিয়া বেগম বলেন, আমার বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে রানা ছিল আমার বেঁচে থাকার অবলম্বন। মিজানুর সহ যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং ফাঁসি চাই। গনেশপুর ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল বলেন, মিজানুর রহমান এবং তার পরিবার সন্ত্রাসী পরিবার। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারপিট, খুন- জখম, টাকার বিনিময়ে অপহরন, ডিপটিউবয়েল, জমি ও দোকানঘর দখল করায় তার কাজ। গনেশপুর সহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের সাধারন মানুষ তাদের দ্বারা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত। জীবনের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া
দরকার। মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, এই মামলায় মিজানুর রহমান নামে একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকিদের ধরতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।