ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলার দক্ষিণ দিঘলদিতে নির্যাতন, অগ্নি সংযোগ, বোমা হামলা, নারীর সম্ভ্রমহানী ও লুটতরাজের ঘটনায় নিরাপত্তা ও বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধায় শহরের গাজিপুর রোডস্থ নিজ বাড়িতে দক্ষিণ দিঘলদী ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নওশাদ হোসেন মুন এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নওশাদ হোসেন মুন জানান, তিনি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু ও তার সু-যোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
তিনি আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে ভোলা সদরের দক্ষিণ দিঘলদীতে একজন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। তার মার্কা হচ্ছে আনারস।
তিনি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনে কাগজপত্র দাখিল করার পর থেকেই তার প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান স্বপনের নেতৃত্বে তার ক্যাডার ও গুন্ডা বাহীনি পুরো ইউনিয়নের সাধারন মানুষের উপর নির্যাতনের স্টীমরোলার চালানো শুরু করেছে। তার উপস্থিতিতে ক্যাডাররা দক্ষিণ দিঘলদী’র বটতলা বাজারে তার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের দোকান-পাটে হামলা, লুটতরাজ ও ভাংচুর চালিয়ে সেগুলোতে তালাবদ্ধ করে রেখেছিলো। ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ সুপার ওই তালা খুলে দেন। এরপর থেকে সেখানে স্বপন বাহীনির তান্ডবলীলা থেমে থাকেনি। তার সমর্থন করায় একেরপর এক সাধারন ভোটারদের উপর নির্যাতন-নীপিড়ন ও হামলা অব্যহত রেখেছে নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপনের বাহীনি। রাত-দিন বিরামহীনভাবে গ্রামের আনাচেকানাচে এসব সন্ত্রাসীরা গুলি বর্ষন ও বোমা ফাটিয়ে দক্ষিণ দিঘলদী’র জনপদকে অশান্ত করে তুলেছে। স্বপন ও তার অস্ত্রধারীরা এ পর্যন্ত গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষকে হামলা করে আহত করেছে। তার লাইসেন্স করা অস্ত্রের সাথে আরো বহু অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে মানুষকে গুলি করছে। অথচ, তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্রটি প্রশাসন জমা নিয়ে থানায় রেখেছেন,
যা খুবই দূ:খজনক। ক্যাডাররা শুক্রবার ( ৩১ ডিসেম্বর) ভোররাতে তার গ্রামের বসত বাড়ীর বৈঠকখানাটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারী তার কোন সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে গেলে তাদের হত্যা,গুম ও হামলা করে গুরুত্বর জখম করার হুমকি দিচ্ছে স্বপন ও তার স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নওশাদ হোসেন মুন আরো জানান, নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান স্বপন তার নৌকা প্রতীকে প্রকাশ্যে সিল মারতে হবে বলে ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ বিনষ্ট ও কেন্দ্রে দখলে নিতে স্বপন তার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলেও বলে বেড়াচ্ছেন।
ইতিমধ্যে ভোট ডাকাতি করতে তার নিকটাত্নীয় জেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ফিদা হাসানকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, স্বপন পরিবারের নিয়ন্ত্রিত তার চাচা সাংসদ আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদের মাতা মরহুমা ফাতেমা খানমের নামীয় বাংলাবাজারস্থ “ফাতেমা খানম”কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকগনকে দক্ষিণ দিঘলদী’র ভোট কেন্দ্রেগুলোর প্রিসাইডিং ও পুলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। যাতে নিজেদের ইচ্ছেমত ভোট ডাকাতি করা যায়।
চেয়ারম্যান প্রার্থী ইফতারুল হাসান স্বপনের ভাই মইনুল হোসেন বিপ্লব উক্ত কলেজের গভর্নিং বোর্ডের সভাপতি। এসব নীল নকশা করে স্বপন বাহীনি এখন পুরো ইউনিয়নবাসীকে এক ভীতিকর অবস্থার মধ্যে জিম্মি করে রেখেছেন। গ্রামের মানুষের উপর ব্যাপকভাবে নির্যাতন চালাতে বিভিন্ন জেলা থেকে ইতিমধ্যেই ভাড়াটিয়া কয়েকশত স্বশস্ত্র ক্যাডারদেরকে দক্ষিন দিঘলদীতে এনে রেখেছেন।
এরাই এখন প্রকাশ্যে গ্রামে অস্ত্রের মহড়া চালাচ্ছে। উদ্ভুত পরিস্থিততে দক্ষিন দিঘলদীতে আগামী ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে সাধারন ভোটাররা অবাধ ও শান্তিপূর্ন ভোট প্রদান করতে পারবেন কি-না সে বিষয়ে তিনি এবং এলাকার জনগন খুবই সংশয় আর দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করে বলেন,
এসব ঘটনাগুগো যাচাই-বাচাই ও তদন্ত করে সাংবাদিকদের ক্ষুরধার লেখনির মাধ্যমে প্রশাসনের কানকে সজাগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সেখানকার মানুষকে সহযোগিতা করার দাবী জানিয়েছেন।