আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা : গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার ধর্ষণ মামলার বাদীকে মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ ফেব্রুয়ারী সোমবার দুপুরে ভূক্তভোগী মামলার বাদী মিনারা বেগম তার নিজ বাড়ী ঝালিঙ্গী গ্রামে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, আমার স্বামী অনুমানিক ২০ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। আমার স্বামী মৃত্যুর পর ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে অতি কষ্টে দিন অতিবাহিত করিয়া আসিতেছি।
এমতাবস্থায় অনুমান ৭ বছর পূর্বে উপজেলার রায়তী নড়াইল গ্রামের মৃত তাহাদুল ইসলামের পুত্র হোসেন শাহ এর সহিত পারিবারিক প্রস্তাবের মাধ্যমে আমার মেয়ে লিমার বিবাহ হয়। আমার জামাই ও ১নং আসামী উভয়ই নেশাখোর হওয়ায় তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই সুবাদে ১নং আসামী আমিনুর ইসলাম সৈয়দ আলী ওরফে ডাক্তার সৈয়দ আমার মেয়ে জামাইয়ের মাঝে মধ্যে বিভিন্ন সময় উভয় উভয়ের বাড়ীতে যাতায়াত করিত। এরই ধারাবাহিকতায় ৩ জুন ২০২১ রাত্রি ৮টার দিকে ১নং আসামী আমিনুর ইসলাম সৈয়দ আলী ওরফে ডাক্তার সৈয়দ আমার মেয়ে লিমার শয়ন ঘরে প্রবেশ করে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
আমার মেয়ের আত্মচিৎকারে বাড়ীর ও আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমার মেয়েকেই দোষারোপ করে। আমার মেয়ে আমাকে মোবাইল ফোনে উক্ত বিষয়টি জানালে আমি পলাশবাড়ী থানা পুলিশের সহযোগীতায় মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ব্যাপারে আমি বাদী হয়ে ৪ জনকে আসামী করে ৪ জুন ২০২১ তারিখে পলাশবাড়ী থানায় এফআইআর নং- ৮/১১৯ জি.আর ১১৯ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধীত-২০০৩) এর ৯(৪)(খ)/৩০ তৎসহ ৩১৪/৩২৩/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় মামলা দায়ের করি। ১নং আসামী জেল হাজতে রয়েছে। অপর আসামীগণ জামিনে আছে। ২ ফেব্রুয়ারী উক্ত মামলার শুনানীর দিন ধার্য্য থাকায় ১নং আসামী আদালতে জামিনের আবেদন করে। উক্ত আবেদন আদালত না মঞ্জুর পরে পূনরায় আসামীকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
উক্ত দিন আমরা আদালত থেকে বাড়ী ফেরার পথে ঢোলভাঙ্গা নামক স্থানে আসামীর লোকজন আমাদের পথরোধ করে জোরপূর্বক সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে তারা পালিয়ে যায়। বর্তমানে আসামীর লোকজন বিভিন্ন সময় আমি, আমার মেয়ে ও আমার বড় জামাইকে রাস্তাপথে ও মোবাইল ফোনে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হত্যার হুমকি প্রদান করে আসছে। মামলা তুলে না নিলে যেকোন সময় তারা আমাকেসহ আমার পরিবারের লোকজনদের হত্যা সহ জানমালের বড় ধরনের ক্ষতি করিবে। বর্তমানে আমি সহ আমার পরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগিতেছি। তাই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে আমি প্রশাসনের প্রয়োজনী হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনের এসময় মিনারা বেগমের কন্যাদ্বয়সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।