বগুড়ার এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় আবদুল লতিফ শেখ (৬০) নামে এক আসবাবপত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) মুন্সীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যার পর খুনি ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে বলে র্যাবের ভাষ্য।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর লতিফ কৌশলে ওই নারীকে একটি ইটভাটার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে কৌশলে চেতনানাশক প্রয়োগ করেন। এরপর তাকে ধর্ষণ করেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে ওই নারীকে হত্যা করে মরদেহ সেখানেই ফেলে যান।
খন্দকার আল মঈন বলেন, নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতে পরে লতিফ স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে জনপ্রতিনিধিকে খোঁজাখুঁজি করার ভান করেন। মরদেহ উদ্ধারের পর তিনি জানাজা ও দাফনেও অংশ নেন এবং ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। পরে তিনি এলাকা ছাড়েন।
এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ইউপি সদস্যের স্বামীসহ দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়। তবে লতিফ শেখ একাই ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাত মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদে কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ওই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে লতিফ শেখের পরিচয় হয়। পরে তার সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ ভবন এবং আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময় দেখা করেন লতিফ শেখ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বগুড়ার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নিখোঁজ হন। এ ঘটনার তিন দিন পর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের কুড়িগাঁতী গ্রামের একটি ইটভাটার পাশে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে বগুড়ার ধুনট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, র্যাবের পক্ষ থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) র্যাব-১২ অভিযান চালিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে অভিযুক্ত আব্দুল লতিফ শেখকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লতিফ শেখ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
লতিফের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে বগুড়ায় একটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তিনি সাত মাস কারাভোগ করেন।