মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও : হতদরিদ্রের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণের কার্ডে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট, জামালপুর, আকচা, রুহিয়া ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। টাকা ছাড়া দেওয়া হয়না কার্ড, আবার টাকা নিয়েও কার্ড দিচ্ছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও সদস্যর বিরুদ্ধে। এত অনিয়ম, অভিযোগ দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না প্রশাসন। এনিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তক্ষেপ কামনা করেন কার্ড বঞ্চিতরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ঢোলারহাট ইউনিয়নে দুস্থ্য, গরিবদের পরিবর্তে টাকার বিনিময়ে সচ্ছলদের কার্ড দিচ্ছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ওসমান আলী ওহাব।
মালেক নামে এক ভ্যান চালক বলেন, দশ টাকা কেজি চাল দিবে বলে তার কাছে ৩০০টাকা নেন মেম্বার ওহাব। পরে কার্ড না পেয়ে টাকা ফেরত চাইলে মেম্বার বলেন পরের মাসে কার্ড দিবেন বলে জানান তিনি। হরদেব চন্দ্র আরেক ভুক্তোভুগী বলেন, চালের কার্ড দেওয়ার নামে তার কাছে ২০০ টাকা নেন মেম্বার। কিন্তু কার্ড তো দুরের কথা সে টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। প্রদীপ, সুকুমার, আনোয়ার সহ আরো ৩০ জনের কাছে থেকে ৩০০/৪০০ টাকা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
অন্যদিকে সদরের জামালপুর ইউনিয়নে একই চিত্র। ওই ইউনিয়নে প্রায় ১৬০ জন অসচ্ছল দিনমুজুরের কার্ড বাতিল করে টাকার বিনিময়ে সচ্ছল ধনী ব্যক্তিদের কার্ড দেওয়ার অভিযোগ তুলেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ স্বার্থ হাসিলের জন্য মেম্বার-চেয়ারম্যানরা দুস্থ্যদের নাম বাতিল করে বড় লোকদের ডেকে ডেকে কার্ড দিচ্ছে। অনেকে টাকা দিলেও কার্ড পাননি বলে অভিযোগ তাদের।
দশ টাকা চাল এর ব্যাপক অনিয়ম ও অসুস্থ্য, বিধবা, অসচ্ছলদের নাম বাতিল করে নিজ পছন্দীয় ব্যক্তিদের কার্ড দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সদরের আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধেও। ফাতেমা, রোকেয়া, আরিফ, তায়মুর, রবিউল নামে আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, আমরা দিনমুরি করে সংসার চালায়। আমাদের দশ টা চালের কার্ড বাতিল করে নিজেদের আত্নীয়-স্বজন পরিবারের সদস্যদের কার্ড দেয় চেয়ারম্যান। এই ইউনিয়নে মেম্বার-চেয়ারম্যান একতরফা তালিকা তৈরি করায় ভুমিহীন, দিনমজুর ও হতদরিদ্র পরিবারগুলো বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
এবিষয় ইউপি সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, আমরা যা করছি চেয়ারম্যানের নির্দেশে করছি। আর চেয়ারম্যানরা বলছেন দশ টাকা চালের কার্ডের কোন অনিয়ম হচ্ছে না। গরিব দুঃখিরাই এ কার্ড পাচ্ছে। তবে টাকা নেওয়া ও কার্ড বাতিলের বিষয়টি এড়িয়ে যান তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ইউএনও আবু তাহের মোঃ সামসুজ্জামান জানান, টাকার বিনিময়ে কার্ড করে দেওয়া বা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।