শেরপুরের শ্রীবরদীতে পুলিশের সামনেই শেখবর আলী নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ১৮ দিন পর একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৩ মার্চ এ হত্যার ঘটনা ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ভাইরাল হয় রোববার।
ভিডিওটি ভাইরালের পর জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সোমবার ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ঘটনাটি নানা মহলে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
এদিকে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখবর আলীর ছোটভাই মাহফুজ বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর ঘটনার দিন ৩ জন এবং পরবর্তীতে প্রধান আসামি জিকোসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরীসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী জাকির হোসেন জিকোর সঙ্গে শেখবর আলীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জেরে ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শেখবর আলী। পরে ঘটনা তদন্তে পরদিন ২৩ মার্চ বিকালে ঘটনাস্থলে যান থানা পুলিশের এসআই ওয়ারেস আলীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এ সময় জিকোসহ ৪-৫ জন অতর্কিতভাবে ধারালো দা, রাম দা, ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর ওপর হামলা করলে ঘটনাস্থলেই শেখবর আলী মারা যান।
এ ঘটনায় ওই দিন অভিযান চালিয়ে জিকোর স্ত্রীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। ২৪ মার্চ রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান রাজাকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার ছায়া তদন্তে নেমে একই দিন শ্রীবরদীর বালিজুড়ি এলাকার গহীন অরণ্য থেকে মামলার প্রধান আসামি জিকোকে গ্রেফতার করে র্যা ব-১৪। এ নিয়ে ওই মামলায় মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়- পুলিশের সামনেই অতর্কিতে রাম দা, গরু জবাই করার ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর উপর উপর্যুপরি আঘাত করে জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ অন্যরা। ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশ হতবিহবল হয়ে পড়ে এবং নির্বাক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য দেখে। মুহূর্তের মধ্যেই পুরো হত্যাকাণ্ড এবং পুলিশের প্রতি তেড়ে আসার ঘটনা ভিডিওতে লক্ষ্য করা যায়।
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের জড়িতের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে জিকো ও সাইফুল। এছাড়াও এ ঘটনায় পুলিশের এসআই ওয়ারেস আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এছাড়া এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।