‘কিতনে আদমি থে?’ ‘শোলে’ সিনেমা গব্বর সিং’র বিখ্যাত এ ডায়লগের কথা কে না জানে! ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পরে এ নামেই বেশি পরিচিত তিনি। হ্যা, বলছি বলিউডের অন্যতম খলনায়ক আমজাদ খানের কথা।
শুধু ‘শোলে’ নয়, এরপর আরও বহু ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে গভীর ছাপ রেখেছেন তিনি। অনবদ্য অভিনয় করে নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। দেশ-বিদেশে তার ভক্তকুলের সংখ্যাও কম নয়। তবে একসময় মানবেতর জীবন যাপন করেছেন আমজাদ খান।
আনন্দবাজার পত্রিকার বরাতে জানা গেছে, সম্প্রতি আমজাদের বড় ছেলে শাদাব খানের এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, অর্থকষ্টের জেরে নিজের স্ত্রী শেহলা খানকে হাসপাতাল থেকে ছাড়াতে পারছিলেন না ‘গব্বর সিংহ’। হাসপাতালের খরচ মেটানোর অবস্থা ছিল না তার।
এক প্রযোজকের কাছ থেকে টাকা না পাওয়ায় সেই সময়ে প্রবল আর্থিক অনটনে ভুগছিল আমজাদের পরিবার। প্রথম সন্তান শাদাবের জন্মের পর হীনমন্যতার কারণে বিধ্বস্ত আমজাদ নিজের স্ত্রীর সামনে আসতেন না। অবস্থা এতটাই করুণ ছিল যে হাসপাতালে স্ত্রীর কাছে মুখ দেখাতেও লজ্জা বোধ করতেন আমজাদ। এদিকে সদ্যজাত সন্তানকে কোলে নিয়ে দিনরাত কেঁদে ভাসাতেন শেহলা।
আমজাদের পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে ‘হিন্দুস্তান কি কসম’ ছবির প্রযোজক চেতন আনন্দ এসে আমজাদকে ৪০০ টাকা ধার দেন। পরবর্তীতে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে স্ত্রী এবং ছেলেকে ঘরে ফেরেন ‘গব্বর সিং’।
ছেলে শাদাবের দাবি, তার বাবা কখনও টাকা জমাননি। এমনকি নিজের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের জন্যও কোনো সঞ্চয় রেখে যাননি তিনি। তার কারণ হিসেবে শাদাব বলেন, আমজাদের বন্ধুরা এসে তাদের অর্থকষ্টের গল্প শুনিয়ে আমজাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যেতেন।
আমজাদের মৃত্যুর পর তিন ছেলেমেয়েকে অনেক কষ্টে বড় করের শেহলা। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের এক গ্যাংস্টার ফোন করে শেহলাকে জানান, একধিক প্রযোজকদের কাছে সব মিলিয়ে প্রায় সওয়া কোটি টাকা পান আমজাদ। তিন দিনের মধ্যে সেই টাকা তিনি উদ্ধার করে দেবেন বলে আশ্বাসও দেন। কিন্তু শেহলা সেই টাকা নিতে অস্বীকার করেন। নিজে ব্যবসা শুরু করে নিজের ছেলেমেয়েদের বড় করেন আমজাদ-পত্নী।